নবী শুয়াইব (আ.) এর জীবনীতে মুসলমানদের জন্য যে শিক্ষা

নবী শুয়াইব (আ.) এর জীবনীতে মুসলমানদের জন্য যে শিক্ষা

মাদইয়ান নামক শহরের এক সম্প্রদায়ের কাছে আল্লাহ তায়ালা নবী শুয়াইব আ.-কে প্রেরণ করেছিলেন। এই সম্প্রদায় আল্লাহর একত্ববাদ থেকে দূরে ছিল এবং বেশ কিছু বদাভ্যাস ছিল তাদের মাঝে।  তাদের বদাভ্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ওজন ও পরিমাপে কম দেওয়া। এছাড়াও তারা ডাকাতি, ছিনতাই, লুটতরাজের মতো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ছিল। 

মাদইয়ান নামক শহরের এক সম্প্রদায়ের কাছে আল্লাহ তায়ালা নবী শুয়াইব আ.-কে প্রেরণ করেছিলেন। এই সম্প্রদায় আল্লাহর একত্ববাদ থেকে দূরে ছিল এবং বেশ কিছু বদাভ্যাস ছিল তাদের মাঝে।  তাদের বদাভ্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ওজন ও পরিমাপে কম দেওয়া। এছাড়াও তারা ডাকাতি, ছিনতাই, লুটতরাজের মতো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ছিল। 

শুয়াইব আ. তাদের সব ধরনের বদ অভ্যাস ছাড়ার আহ্বান জানালেন। কিন্তু তারা নবীর কথা অমান্য করলো। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ধ্বংস করে দিলেন।

মুহাম্মদ সা.-এর উম্মত হিসেবে একজন মুসলমানের জন্য পূর্ববর্তী সব নবীকে সত্য মনে করা জরুরি এবং তাঁদের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা যেই তাওহীদের বাণী প্রচার করেছেন তা বিশ্বাস করা কর্তব্য। তাঁদের জীবনী থেকে উত্তম বিষয়গুলো উম্মতে মুহাম্মদীর জন্যও শিক্ষণীয়। এখানে শুয়াইব আ.-এর জীবনী থেকে কয়েকটি শিক্ষা তুলে ধরা হলো—

১. শুয়াইব আ. তাঁর যুগের সম্ভ্রান্ত ও সম্মানিত বংশের সন্তান ছিলেন। নবুয়ত ছাড়াও তিনি তিনি দুনিয়াবী সম্পদে সমৃদ্ধিশালী ছিলেন। সব নবীই আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে নিজ নিজ যুগের সম্ভ্রান্ত বংশে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তারা উচ্চ মর্যাদাশীল ব্যক্তি ছিলেন। 

২.  শুয়াইব আ.-এর সম্প্রদায়ের নেতারা ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মীয় বিধি-বিধান মানতে প্রস্তুত ছিল। তবে তারা বৈষয়িক জীবনে ধর্মীয় বাধা-নিষেধ মানতে রাজি ছিল না।

৩. আল্লাহকে স্বীকার করলেও তাদের মধ্যে অসীলা (মাধ্যম গ্রহণ) পূজা ও মূর্তিপূজার শিরকের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। অর্থাৎ, তারা কোনো কিছুর মাধ্যম গ্রহণ করে সেটাকে পাওয়ার মাধ্যম মনে করতো।

৪. বাপ-দাদার আমল থেকে চলে আসা রসমপূজা ছেড়ে নির্ভেজাল তাওহীদের সংস্কার ধর্মী দাওয়াত গ্রহণে রাজি ছিল না তারা।

৫. পার্থিব লোভ লালসার পূজা ও প্রবৃত্তি পূজার কারণেই তারা শিরকী রেওয়াজ এবং বান্দার হক বিনষ্টকারী অপকর্মগুলো করতো।

৬. প্রচলিত কোন অন্যায় রীতির সঙ্গে আপোষ করে তা দূর করা সম্ভব নয়। বরং শত বাধা ও ক্ষতি স্বীকার করে হলেও আল্লাহর উপর ভরসা করে আপোষহীনভাবে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াই প্রকৃত সমাজ সংস্কারকের কর্তব্য। 

৭. সমাজ সংস্কারক অর্থাৎ আলেম ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে সব সময় স্পষ্ট দলীলের উপর অটল থাকতে হবে।

৮. মাজ সংস্কারক অর্থাৎ আলেমকে অবশ্যই ধৈর্যশীল ও প্রকৃত সমাজদরদী হতে হবে।

৯. ধর্মীয় কাজের ক্ষেত্রে দুনিয়াবী প্রতিদানের আশা করা যাবে না।

১০. সব বিষয়ে আল্লাহ তায়ালার তাওফীক কামনা করতে হবে এবং প্রতিদান শুধু তাঁর কাছেই চাইতে হবে। 

১১. শিরক-বিদয়াত ও জুলুম অধ্যুষিত বিপরীতমুখী সমাজে তাওহীদের দাওয়াতের মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াকে দুনিয়াদার সমাজনেতারা ফাসাদ ও ক্ষতিকর মনে করে। কিন্তু সব বাধা উপেক্ষা করে তাওহীদের দাওয়াত দিয়ে যাওয়াই হল সংস্কারকের মূল কর্তব্য।

১২. চূড়ান্ত অবস্থায় আল্লাহর কাছেই ফায়সালা ও তাঁর রহমত কামনা করতে হবে। 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *