সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার রুপাকুড়া এলাকার দুদুয়ার খালের ওপর নির্মিত সেতুটি। ফলে দুর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়ে এই সেতুর ওপর দিয়েই যাতায়াত করছে ৩ উপজেলার মানুষ। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করা স্থানীয় এবং শিক্ষার্থীরা। এই সেতুটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার বা নতুন ভাবে নির্মাণের দাবি সেতু ব্যবহারকারীদের।
সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার রুপাকুড়া এলাকার দুদুয়ার খালের ওপর নির্মিত সেতুটি। ফলে দুর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়ে এই সেতুর ওপর দিয়েই যাতায়াত করছে ৩ উপজেলার মানুষ। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করা স্থানীয় এবং শিক্ষার্থীরা। এই সেতুটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার বা নতুন ভাবে নির্মাণের দাবি সেতু ব্যবহারকারীদের।
সাম্প্রতিক সময়ে মূল সেতুটির একটি অংশ ভেঙে পড়ায় সেখানে লোহার পাত বসিয়ে সাময়িকভাবে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে, তবে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। লোহার পাত বসানোর পরেও এই ভাঙা সেতুর ওপর যেকোনো ধরনের গাড়ি উঠলেই সেতুটি বিপদজনকভাবে কাঁপতে থাকে। যার ফলে ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় দুই যুগ আগে দুদুয়ার খালের ওপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণের এক বছর যেতে না যেতেই পাহাড়ি ঢলে দুদুয়ার খালের পাশাপাশি ভোগাই নদীর বাঁধ ভেঙে এক হয়ে যায়। আর এই কারণে এই সেতুটির বেশিরভাগ অংশ ভেঙে যায় এবং অনেক স্থানে ডেবেও যায়। সেতুটির রেলিংও ভেঙে যায়। বিভিন্ন অংশে ভেঙে যাওয়া সেতুটিতে এত বছরেও একবারও সংস্কার হয়নি। নালিতাবাড়ী উপজেলা শহর থেকে নয়াবিল হয়ে বারোমারী বাজারে যাতায়াত করা যাত্রীরা এবং আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে এই সেতু দিয়ে চলাচল করে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত ছোট-বড় যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, বর্তমানে রেলিংবিহীন ক্ষতিগ্রস্ত এই সেতুর ওপর দিয়ে নয়াবিল ইউনিয়নের রুপাকুড়া, দুধকুড়া, দাওয়াকুড়া, চাটকিয়া, দাওধারা, ডালুকোনা, মানিকচাঁদপাড়া এবং পার্শ্ববর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের শেকেরকুড়া, আন্ধারুপাড়া, বারোমারী ও পলাশীকুড়া গ্রামের প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার লোকজন এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। গ্রামবাসী ছাড়াও এই সেতু দিয়ে শহীদ স্মৃতি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চাটকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাওয়াকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করেন।
সেতু ওপর দিয়ে চলাচল করা রুপাকুড়া গ্রামের সোহেল মিয়া বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা এই ভাঙা সেতুর ওপর দিয়ে স্কুলে যায়, তাদের জন্য হলেও এই সেতুটি মেরামত বা নতুনভাবে করা হোক।
পলাশীকুড়া এলাকার আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন এই সেতু ওপর দিয়ে দুই থেকে তিনশতাধিক ছোটবড় গাড়ি চলাচল করে। দুদুয়ার খালের ওপরে সেতুটির রেলিং নেই। কেউ যদি হঠাৎ পড়ে যায় বাঁচার কোনো উপায় নেই। আমরা চাই এই সেতুটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার বা নতুনভাবে করা হয়। এতে করে আমাদের নিজের জীবনের ঝুঁকি কমবে।
এই সেতুর ওপর দিয়ে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পণ্য পাশের নয়াবিল এবং নালিতাবাড়ী উপজেলা শহরে নিয়ে যায়। বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ বেশি হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষ ও কৃষকরা মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগে আছেন। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওই এলাকার সাধারণ কৃষকরা তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো ৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে পরিবহন করছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রথীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ বলেন, রুপাকুড়া গ্রামের সেতুটি বারোমারী, নয়াবিল ও নালিতাবাড়ী উপজেলা শহরের যাতায়াতের মাধ্যম। বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তাই রুপাকুড়া গ্রামের সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জোর দাবি জানাই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, রুপাকুড়া এলাকার দুদুয়ার খালের ওপর ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির স্থলে একটি নতুন সেতু নির্মাণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
আরকে