দিনব্যাপী ঢাকার পথে পথে ছিল উল্লাস

দিনব্যাপী ঢাকার পথে পথে ছিল উল্লাস

সরকারের পদত্যাগ দাবির এক দফা দাবি আদায়ে ঢাকার রাজপথ দখলে নিয়েছিল ছাত্র-জনতা। বিভিন্ন এলাকা, অলিগলি থেকে জনস্রোত এসে মিশেছিল ঢাকার সব পথে পথে। ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল ছিল ঢাকা। ঢাকার রাজপথে দিনব্যাপী ছিল উল্লাস।

সরকারের পদত্যাগ দাবির এক দফা দাবি আদায়ে ঢাকার রাজপথ দখলে নিয়েছিল ছাত্র-জনতা। বিভিন্ন এলাকা, অলিগলি থেকে জনস্রোত এসে মিশেছিল ঢাকার সব পথে পথে। ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল ছিল ঢাকা। ঢাকার রাজপথে দিনব্যাপী ছিল উল্লাস।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ৩৬ দিন আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। পরে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপান্তরিত হলে দেশজুড়ে সংঘাতে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর ঢাকাজুড়ে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে সোমবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হতে শুরু করেন ছাত্র-জনতা। পরে ঢাকার রাজপথ পুরোপুরি সাধারণ জনতার দখলে আসে। দুপুর থেকে রাজধানীর পথে পথে আন্দোলনকারী সাধারণ জনতার বিজয় উল্লাস করতে দেখা যায়।

অনেকে বিজয়সূচক চিহ্ন দেখিয়ে, ঢোল বাজিয়ে নেচে-গেয়ে উল্লাস করেছেন। তাদের অনেকের হাতে ও মাথায় বাঁধা ছিল জাতীয় পতাকা। গণভবনের ভেতরে প্রবেশ করেও উল্লাস করেন তারা। সেখান থেকে দামি দামি জিনিসপত্র, টেলিভিশন, ফুলের টব, হাঁস, বালতি, মাছ, মাংস নিয়েও বের হতেও দেখা গেছে অনেককে। সংসদ ভবনের বিভিন্ন কক্ষেও প্রবেশ করেন তারা। চেয়ার বসে ছবি তোলেন। কেউ নাচানাচি আর হৈহুল্লোড় করছিলেন। সংসদের লেকে নেমে কেউ কেউ গোসলও করেন।

এছাড়া সরকার পতনের খবরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সভাপতির কার্যালয়ের পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরসহ অসংখ্য স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে ভারতে চলে গেছেন শেখ হাসিনা।

অন্যদিকে বিকেলে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে। আমি জনগণের জানমালের দায়িত্ব নিয়েছি। আপনারা আশাহত হবেন না। আপনাদের সব দাবি পূরণ করা হবে।

সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন। চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে।

এদিকে অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র, নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের অংশগ্রহণে আগামী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। রাতে বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ বলেন, ছাত্র-নাগরিক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। ছাত্র-নাগরিক প্রতিনিধিত্বের সঙ্গে আলোচনা ব্যতীত কোনো প্রকার সেনা-সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যাবে না। অভ্যুত্থানে অংশীজন ছাত্র, নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের সহযোগী বা সুবিধাভোগীদের এ সরকারে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থান অর্জন হয়েছে। কোনো উসকানি, সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে না ওঠে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত যারা ঢাকায় আছেন তারা রাজপথে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করুন।

আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

নিজেদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই গত ১৬ বছরে যত রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া সব রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে।

এএসএস/এসএসএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *