তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে নদী দূষণ, হুমকির মুখে ইলিশের প্রজনন

তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে নদী দূষণ, হুমকির মুখে ইলিশের প্রজনন

বরগুনার আমতলীতে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে নদী দূষণে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের সংকট তৈরির প্রতিবাদে নৌ র‌্যালি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় সব ধরনের কয়লা প্রকল্প বন্ধসহ বিদ্যমান কয়লা সুবিধা বন্ধ করা ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। 

বরগুনার আমতলীতে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে নদী দূষণে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের সংকট তৈরির প্রতিবাদে নৌ র‌্যালি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় সব ধরনের কয়লা প্রকল্প বন্ধসহ বিদ্যমান কয়লা সুবিধা বন্ধ করা ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। 

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংলগ্ন খোট্টারচর নামক এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং পায়রা নদী ইলিশ রক্ষা কমিটির আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ ছাড়াও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ এবং নদীরক্ষা ও শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের দাবিতে আয়োজিত নৌ র‌্যালি ও মানববন্ধনে আরও অংশগ্রহণ করেন—এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি), এশিয়া এনার্জি নেটওয়ার্ক (এইএন), গ্লোবাল ফাইট টু ইন্ড ফসিল ফুয়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), স্থানীয় মৎসজীবী ও ইলিশ উদ্যোক্তারা।

পায়রা নদী ইলিশ রক্ষা কমিটির সভাপতি সুলতান সিকদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, তালতলীর তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে পায়রা নদী দূষণ হচ্ছে। এতে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ কমতে শুরু করায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। তালতলীতে এ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পর থেকেই নদী দূষণসহ ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতিনিয়ত বের হওয়া গরম পানির প্রভাব পড়ছে নদীর পরিবেশে। এতে ব্যাপকভাবে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। 

বক্তারা আরও বলেন, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের খাল বন্ধ হওয়ার কারণে কৃষিজমির উৎপাদন কমে গেছে। এ অঞ্চলের কৃষকদের বিভিন্ন ফসল—তরমুজ, মরিচ, সূর্যমুখী ও ডালের ফলন আশানুরূপ না হওয়ায় এখন বিপাকে পড়েছেন তারা। 

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, তালতলী ও আমতলী  উপজেলার সমন্বয়ক আরিফ রহমান বলেন, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে নদী ও খালের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষ করে এ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নারী ও শিশুরা নানা ধরনের চুলকানি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে তাদের দৈনন্দিন কাজে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও কৃষকদের কৃষি জমি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি না হওয়ায় অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। এ কারণে সব ধরনের কয়লাভিত্তিক প্রকল্প বন্ধসহ বিদ্যমান কয়লা সুবিধা বন্ধ করা ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। পরে মানববন্ধন শেষে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংলগ্ন নদীতে প্রতিবাদস্বরূপ একটি নৌ র‌্যালি বের করা হয়। এ সময় কয়লাবিরোধী নানা রঙের প্ল্যাকার্ড এবং ফেস্টুন প্রদর্শন করা হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন, শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত রক্ষা কমিটির সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর মিয়া, তেঁতুল বাড়িয়া নদী ভাঙন রক্ষা কমিটির সমন্বয়ক শাহজাহান শেখ, পয়রা নদী ইলিশ রক্ষা কমিটি সমন্বয়ক সুলতানা আহমেদ ও পরিবেশকর্মী মোস্তাফিজ প্রমুখ।

মো. আব্দুল আলীম/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *