কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে আন্দোলনকারীদের পরিচয় প্রকাশ, ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধা প্রদানের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের দুই শিক্ষিকাকে ক্লাস এবং পরীক্ষার কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে আন্দোলনকারীদের পরিচয় প্রকাশ, ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধা প্রদানের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের দুই শিক্ষিকাকে ক্লাস এবং পরীক্ষার কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা এবং সহযোগী অধ্যাপক মন্দিরা চৌধুরী। বিভাগের ১৩ থেকে ১৭তম ব্যাচে তারা কোন পরীক্ষা বা ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন না।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শাহ কাওসার মোস্তফা আবুলওয়ালী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ড. রেবেকা সুলতানা ও মন্দিরা চৌধুরী ১৩তম ব্যাচ থেকে ১৭তম ব্যাচ পর্যন্ত ক্লাস এবং পরীক্ষা সম্পর্কিত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাবেন। এছাড়া, তারা কোর্স কোঅরডিনেটের দায়িত্ব থেকেও বিরত থাকবেন। আগামী বুধবার থেকে দর্শন বিভাগের সব ক্লাস যথারীতি চালু থাকবে।’
এর আগে, ৫ আগস্টের পর এই দুইজনসহ ৪ শিক্ষকের অব্যাহতি চেয়ে আন্দোলন ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। পরে অন্য দুই জন শিক্ষকের অপরাধ তুলনামূলক কম ও ভুল স্বীকার করায় তাদের ক্ষমা করা হয়। তবে মন্দিরা ও রেবেকার অপরাধ গুরুতর হওয়ায় এবং তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অবস্থান দৃঢ় থাকায় বিভাগ থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মন্দিরা চৌধুরী ক্লাসে ও ভাইভায় শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কটূক্তি করতেন। কেউ পাঞ্জাবি-টুপি পরলে তাকে ‘হুজুর’ বলা বা কোন মেয়ে হিজাব বা বোরখা পরলে তাকে কটূকথা শোনাতেন।
রেবেকা সুলতানার ব্যাপারে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে যখন কোটা আন্দোলন চলছিল তখন তিনি মেয়েদের হলের হাউজ টিউটর ছিলেন। এ সময় তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভিডিও ছাত্রলীগের নেত্রীদের দিতেন যার ফলে ছাত্রীদের অনেক নির্যাতনের শিকার হতে হতো। তাছাড়া, ২০২৪ সালেও তিনি একই কাজ করেছেন। ফেসবুক ও গ্রুপে দেওয়া পোস্ট ও কমেন্টের স্ক্রিনশট তিনি ছাত্রলীগকে সরবরাহ করতেন। যারা আন্দোলন করত তাদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেছেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের হুমকিও দেন তিনি। একই সঙ্গে তিনিও ৩ আগস্ট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নীল দলের প্রোগ্রামে অংশ নেন।
কেএইচ/এসকেডি