ঢাকা কলেজ অধ্যাপককে হেনস্তা : ২ ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

ঢাকা কলেজ অধ্যাপককে হেনস্তা : ২ ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

ছাত্রাবাসে চাহিদা অনুযায়ী তালিকার ভিত্তিতে সিট না দেওয়ায় ডেকে এনে ঢাকা কলেজ অধ্যাপক ও ছাত্রাবাস তত্ত্বাবধায়ককে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রদলের নেতাদের বিরুদ্ধে। হেনস্তার শিকার ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ। তিনি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক এবং দক্ষিণ ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে।

ছাত্রাবাসে চাহিদা অনুযায়ী তালিকার ভিত্তিতে সিট না দেওয়ায় ডেকে এনে ঢাকা কলেজ অধ্যাপক ও ছাত্রাবাস তত্ত্বাবধায়ককে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রদলের নেতাদের বিরুদ্ধে। হেনস্তার শিকার ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ। তিনি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক এবং দক্ষিণ ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কলেজের শহীদ আ ন ম নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে কলেজ শাখা ছাত্রদলের কিছু পদধারী নেতারা শিক্ষকের ওপর চড়াও হচ্ছেন। তারা বারবার শিক্ষকের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন এবং হাত ধরে টানাটানি করছেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষক ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চাইলে কয়েকজনকে তেড়ে যেতেও দেখা গেছে। আর এসব ঘটনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সিরাজ উদ্দিন বাবু ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাজ্জাদ হোসেন জেমিন।

বিষয়টি শিকার করে সাজ্জাদ হোসেন জেমিন বলেন, আমি ক্যান্ডিডেট (প্রার্থী)। আমার অনুসারী বেশি। তাই আমার বিরুদ্ধে একদল ষড়যন্ত্র করছে। আমি ছোট ভাইদের জন্য সিট চেয়েছি। কিন্তু শিক্ষকরা খুবই সামান্য সিট দিয়েছে। হলে সিট দেওয়ার আগে কথিত সমন্বয়ক কিংবা শিক্ষকদের পক্ষে থেকে আমাদের (ছাত্রদল) কাছে জিজ্ঞেস করেনি।

ভিডিও ফুটেজে আরও দেখা যায়, ঘটনাস্থলে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এবং ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের বর্তমান সহ-সাধারণ সম্পাদক মেসকাত হোসেন তনয়, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সংসদের বর্তমান সহ-সাধারণ সম্পাদক সজীব বিশ্বাসও মারমুখী আচরণ করছেন। বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ বলেন, তারা (ছাত্রদল নেতারা) আমাকে একটি লিস্ট দিয়ে বলেছে, এই লিস্টে যারা আছে তাদের সিট দিতে হবে। তবে আমি বলেছি, সিট দেওয়ার আমি কেউ না। যদি সিট থেকেই থাকে সেটা সংশ্লিষ্ট বিভাগ সুপারিশ করবে। ছাত্রাবাসে আসন বরাদ্দের বিষয়টি কলেজ প্রশাসন সমন্বয় করছে। তখন তারা (ছাত্রদল) সেখানে হট্টগোল শুরু করে। পরে আমি সে স্থান থেকে চলে আসি।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি শাহিনুর রহমান বলেন, এমন ঘটনার কথা শুনিনি। আমাদের দলীয় নির্দেশনা আছে যে, কেউ যদি অপরাধ করে থাকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যক্তির দায় কখনো সংগঠন নেবে না।

অপরদিকে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কোনো লিস্ট শিক্ষকদের কাছে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুলহাস মৃধা। তিনি বলেন, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কোনো লিস্ট শিক্ষকদের কাছে দেওয়া হয়নি। কলেজ প্রশাসন তাদের নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে সিট দিয়েছেন। কেউ ব্যক্তিগতভাবে বিশৃঙ্খলা করে থাকলে সাংগঠনিকভাবে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

ছাত্রদল থেকে পদ স্থগিত ও বহিষ্কার করা হয়েছে অভিযুক্তদের

অপরদিকে গতকাল এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাতে অভিযুক্তদের ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার ও পদ স্থগিত করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক মেসকাত হোসেন তনয় এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক সজীব বিশ্বাসের সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।

আর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের অনুমোদনে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে, ঢাকা কলেজ শাখার সহ-সভাপতি সিরাজ উদ্দিন বাবু ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন জেমিনকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একইসঙ্গে ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনোরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরএইচটি/এসএম 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *