জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে বৈঠক হতে যাচ্ছে (মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায়)। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন আলোকচিত্রশিল্পী, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী এবং দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে বৈঠক হতে যাচ্ছে (মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায়)। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন আলোকচিত্রশিল্পী, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী এবং দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপচারিতায় শহিদুল আলম বলেন, একজন নোবেল লরিয়েট হিসাবে ড. ইউনূস জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন, এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। তার হাত ধরেই হারানো জিএসপির সুবিধা ফিরে পাব, সেই আশাবাদ থাকবে।
শহিদুল আলম বলেন, আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রে হয়তো নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। আমি মনে করি, আগামী নির্বাচনে যিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন তার সঙ্গে ড. ইউনূসের সৌজন্যে আমাদের সম্পর্ক আরো গভীর হবে। ড. ইউনূস বিশ্বব্যাপী একজন পরিচিত মুখ, তার মাধ্যমে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, পুরো বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে, সেটা আমরা আশা করছি।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা বিশ্বের কাছে বিস্ময়কর। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারকে যে সরানো যায় তার একটি নজির স্থাপন হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি সমতার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে বলে মনে করেন এই আলোকচিত্রী।
শহিদুল আলম বলেন, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যে দমন নিপীড়ন এবং মুক্ত চিন্তার প্রতিবন্ধকতা ছিল তা দূর হয়েছে। তবে বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তা ধরে রাখা এখন চ্যালেঞ্জ। কারণ বিপ্লব এক জিনিস, দেশ চালানো অন্য জিনিস। এখন সময়-ই বলে দেবে আমরা তা কতটুকু রক্ষা করতে পারব।
বাইডেনের সঙ্গে ড. ইউনূসের অনেক বিষয়ে আলোচনা হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে ফ্রিমড অব প্রেস, ক্লাইমেট চেঞ্জের বিষয়টি অগ্রাধিকার পেতে পারে। ইউনূস-বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার যে বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এটি হচ্ছে মার্কিনিদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা লম্বা সময়। আমি মনে করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা লম্বা সময় ধরে যেন ভালো থাকে সেটা প্রাধান্য দেওয়া উচিত। জো বাইডেনের চেয়ে ইন্ডাস্ট্রির লিডারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা বেশি হওয়া উচিত।
‘যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের গার্মেন্টস পণ্যের সবচেয়ে বেশি ক্রেতা। আমি আশা করব ড. ইউনূস-বাইডেন বৈঠকে জিএসপি ফিরে পাওয়ার বিষয়টি স্থান পাবে।’
স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে গণহত্যার বিষয়টিসহ বৈঠকে ১৬ বছরের দুঃশাসনের বিষয় নিয়েও জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বলে উল্লেখ করেন এই আলোকচিত্রী। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কতটা সহজভাবে গ্রহণ করে তার ওপর।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে এতদিন যে সম্পর্ক ছিল তা ভালো ছিল না। এখন ভিন্ন সম্পর্ক হবে, সেটা আশা করছি। ভারতের কাছে আমাদের অনেক দাবি আছে, পাওয়ার আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে সেই সম্পর্কটা এখন আরও মজবুত হবে, সেটাই আশা করি।
লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি অধ্যাপক শওকত আলী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি হারিয়েছি। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ৬০ শতাংশ তৈরি পোশাক ভারত থেকে আমদানি করে। আমরা আশা করব বাইডেন-ইউনূসের বৈঠকে জিএসপি ফেরত এবং তৈরি পোশাক রপ্তানি ফিরে পাওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে।
এনএম/জেডএস