ড্রাম ধরে ২ দিন নদীতে ভেসে ছিল রাফি, অবশেষে ফিরে এলো মায়ের বুকে

ড্রাম ধরে ২ দিন নদীতে ভেসে ছিল রাফি, অবশেষে ফিরে এলো মায়ের বুকে

দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের বাসিন্দা তাফিকুল ইসলাম রাফি। পড়ে স্থানীয় বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে। শখ করে নদীতে ইলিশ শিকার দেখতে যাওয়াই কাল হলো তার। বৈরী আবহাওয়ায় ট্রলার ডুবে নিখোঁজ হয় রাফি। গত ২ দিন নদীতে ড্রাম ধরে ভেসে ছিল সে।

দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের বাসিন্দা তাফিকুল ইসলাম রাফি। পড়ে স্থানীয় বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে। শখ করে নদীতে ইলিশ শিকার দেখতে যাওয়াই কাল হলো তার। বৈরী আবহাওয়ায় ট্রলার ডুবে নিখোঁজ হয় রাফি। গত ২ দিন নদীতে ড্রাম ধরে ভেসে ছিল সে।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) তাকে নদী থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় জেলেরা। তারপর তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। তবে রাফির ভয় এখনো কাটেনি বলে জানান তার মামা আব্দুর রহমান রাসেল।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইলিশ মাছ শিকার দেখতে আমার ভাগিনা রাফি সাগরে যায়। ফেরার পথে সে যে ট্রলারে ছিল সেটা ডুবে যায়। তারপর সে দুদিন নিখোঁজ ছিল। স্থানীয় জেলেদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়। রাফি ড্রাম ধরে দুই দিন নদীতে ভেসে ছিল। সে অনেক ভয় পেয়েছি। স্বাভাবিক কথা বলতে পারছে না। তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সময় লাগবে।

রাফির বাবা সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রহিম মাঝির ট্রলারে শখ করে আমার ছেলে যায়। ট্রলারে ২০ জন মানুষ ছিল। আমার স্ত্রী সন্তানের শোকে দুই দিন অজ্ঞান ছিল। কোনো খাওয়া দাওয়া করে নাই। অবশেষে আল্লাহর রহমতে তাকে পাওয়া গেছে। এভাবে সবার সন্তান যেন ফেরত আসে সেই দোয়া করি। 

হাতিয়ার মৎস্য ব্যবসায়ী লুৎফুল্লাহিল নিশান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ২১টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। এতে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৭ জন জেলে। উদ্ধার হওয়া জেলেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ড্রাম ধরে সাগরে ভেসে ছিলেন।

লুৎফুল্লাহিল নিশান আরও বলেন, সাগরে ইলিশ আহরণ করে জেলেরা অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। অথচ জেলেদের জীবনমানের কোনো উন্নতি নেই। তাদের কান্না সাগরের ঢেউয়ে মিলে যায়। কেউ শুনতে পায়না। সরকারি সহায়তা নাই বললেই চলে। মরে গেলে যদি লাশ পাওয়া যায় তাহলে ৫০ হাজার টাকা দেয় আর লাশ না পাওয়া গেলে এক পয়সাও পায় না জেলে পরিবার। সরকার যদি জিপিএসসহ উন্নত প্রযুক্তি নিশ্চিত করতে পারতো তাহলে এমন টা হতো না।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় আমাদের মাঝিমাল্লারা বিপদে পড়ে এবং ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সহযোগিতায় আমরা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছি। তবে বৈরী আবহাওয়া হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা সেভাবে করা যাচ্ছে না। তারপর সকলের সহযোগিতায় আমরা আশা করি জেলেরা নিরাপদে ফিরে আসবেন।

হাসিব আল আমিন/আরকে 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *