ডিম-মুরগির বাজারে তেলেসমাতি, সরকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না কিছুই

ডিম-মুরগির বাজারে তেলেসমাতি, সরকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না কিছুই

ভোক্তা পর্যায়ে ডিম-মুরগির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে দ্বিতীয় দফায় দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। কিন্তু এবারও ডিম-মুরগি আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় ডিমের দাম কিছুটা কমলেও মুরগির বাজার বাড়তি রয়েছে। এ অবস্থায় বিপাকেই পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। সরকার নির্ধারিত দামের সঙ্গে বাজারের দাম না মেলার কারণে হতাশা প্রকাশ করছেন তারা। আর খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, ‘আমাদের হাতে কিছুই নেই। আড়ৎ থেকেই বাড়তি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে’।

ভোক্তা পর্যায়ে ডিম-মুরগির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে দ্বিতীয় দফায় দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। কিন্তু এবারও ডিম-মুরগি আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় ডিমের দাম কিছুটা কমলেও মুরগির বাজার বাড়তি রয়েছে। এ অবস্থায় বিপাকেই পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। সরকার নির্ধারিত দামের সঙ্গে বাজারের দাম না মেলার কারণে হতাশা প্রকাশ করছেন তারা। আর খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, ‘আমাদের হাতে কিছুই নেই। আড়ৎ থেকেই বাড়তি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে’।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টর কাঁচাবাজার এবং আবাসিক এলাকার কয়েকটি মুদি দোকান ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

ডিমের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, ডজনপ্রতি ডিম ১৭০-১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে করে প্রতিটি ডিমের দাম পড়ছে ১৪ দশমিক ১৬ টাকা থেকে শুরু করে ১৪ দশমিক ৫৮ টাকা। যদিও সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী প্রতিটি ডিম ১১ দশমিক ৮৭ টাকায় বিক্রির কথা ছিল। সে হিসাবে ডজন হওয়ার কথা ১৪২ দশমিক ৪৪ টাকা। ডিমের দাম আরও বেশি আবাসিক এলাকার মুদি দোকানগুলোতে। এসব দোকানে সরাসরি ৬০ টাকা হালি ডিম বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে পিস প্রতি ডিমের দাম পড়ছে ১৫ টাকা। এছাড়া আড়তে সাদা ডিম ডজন প্রতি ১৭০, হাঁসের ডিম ডজন প্রতি ২২০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ডজন প্রতি ২১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে দ্বিতীয় দফায় ব্রয়লার মুরগির খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ দশমিক ৫৯ টাকা এবং সোনালী মুরগি ২৬৯ দশমিক ৬৪ টাকা দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। তবে বাজারে এই দামের কোনো প্রয়োগ দেখা যায়নি। দোকানিরা ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা এবং সোনালী মুরগি ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। 

যা বলছেন বিক্রেতারা

সরকার নির্ধারিত দামে কেন ডিম-মুরগি বিক্রি করছেন না? — এমন প্রশ্নে বিরক্তি প্রকাশ করেন অধিকাংশ বিক্রেতারা। তারা বলেন, আমাদের কাছে নয় বরং বড় আড়তদারদের কাছে যান। আমরাই বাড়তি দামে তাদের কাছ থেকে কিনে আনি। সে অনুযায়ী পরে খুচরা বাজারেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

আজমপুর কাঁচাবাজারের বি-বাড়িয়া ডিমের আড়তের বিক্রয়কর্মী নোমান বলেন, আগের চেয়ে ডিমের দাম কমেছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রির মতো কোনো অবস্থা আমাদের নেই। আপনারা বড় আড়তগুলোতে যান। সেখানে দামের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করুন। সবাই এখানে এসেই দামের বিষয়টি নিয়ে কথা-কাটাকাটি করছে। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই।

অপরদিকে মুরগি বিক্রেতারাও সরকার নির্ধারিত দামের বিষয়ে কথা বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

মিরাজুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিমের দাম বাড়াচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, ডিম মজুত করে রাখা হয় এবং সংকট তৈরি করার পর বেশি দামে বিক্রি করা হয়। এই ধরনের কারসাজি ভোক্তাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে এবং বাজারে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। আবার কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই এই সিন্ডিকেটের পকেটে কোটি-কোটি টাকা চলে যাচ্ছে।

আবুল হোসেন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবৈধভাবে মজুত করা ডিম উদ্ধার করেছে। মজুতদারেরা ইচ্ছাকৃতভাবে ডিমের দাম বাড়ানোর জন্য এই পন্থা অবলম্বন করে। কোল্ড স্টোরেজে ডিম মজুত করে রাখার নজির বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোথাও আছে কিনা জানি না। অসাধু মজুতদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এছাড়া, টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে ডিমও সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রির চেষ্টা করে দেখতে পারে। তাহলে হয়তো দাম কমতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মুরগির ডিমের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। যা পরের দিন বুধবার থেকে সারা দেশে কার্যকর হয়েছে।

আরএইচটি/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *