টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রতিটি খাবার, কার্যকলাপ এবং পছন্দ-অপছন্দের দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ এগুলো সবই আপনার স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা যা ইনসুলিন প্রতিরোধের কারণে উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এর মানে হলো শরীর কার্যকরভাবে ইনসুলিন ব্যবহার করে না। কিন্তু এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণের কিছু সহজ এবং প্রাকৃতিক প্রতিকার রয়েছে। তেমনই একটি প্রতিকার হলো রসুনের চা, এই চা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২০১৭ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিসের প্রকোপ ১৯৮০ সালে ১৫৩ মিলিয়ন থেকে ২০০৮ সালে ৩৪৭ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। ধারণা করা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৪৩৯ মিলিয়নে গিয়ে ঠেকবে।
রসুন আমাদের রান্নাঘরের একটি প্রধান উপাদান। শুধুমাত্র এর স্বতন্ত্র গন্ধের জন্যই নয় বরং বিভিন্ন সুবিধার জন্যও রসুন পরিচিত। এর সক্রিয় যৌগ, বিশেষ করে অ্যালিসিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যালিসিন হলো একটি সালফারযুক্ত যৌগ যা রসুন কাটার সময় তৈরি হয়। এর বিভিন্ন থেরাপিউটিক প্রভাব রয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
২০০৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁচা রসুন খাওয়ার সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা কমানো এবং এথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস করার সম্পর্ক রয়েছে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এথেরোস্ক্লেরোসিস-সম্পর্কিত প্রদাহের ঝুঁকির কারণে এটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
২০১৭ সালের সমীক্ষা অনুসারে, খাদ্যতালিকায় রসুন যোগ করলে তা ১-২ সপ্তাহের মধ্যে রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণকে উন্নত করতে পারে। এটি খাওয়ার সপ্তাহের মধ্যে মোট কোলেস্টেরল এবং উচ্চ/নিম্ন-ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রসুনের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
রসুন চা খাদ্যতালিকায় রসুনকে অন্তর্ভুক্ত করার একটি সহজ উপায়। গরম পানিতে রসুনের কোয়া সেদ্ধ করলে অ্যালিসিন সহ উপকারী যৌগ বের হয়ে আসে। তখন শরীরের পক্ষে তা গ্রহণ করা সহজ হয়। রসুন কোষের ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ করে তোলে।
প্রদাহ টাইপ ২ ডায়াবেটিসের বিকাশ এবং অগ্রগতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। রসুনের শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহকে প্রশমিত করতে এবং সামগ্রিক বিপাকীয় স্বাস্থ্যকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বেশি। রসুন কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে এবং রক্তচাপ কমাতে কাজ করে, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।
এইচএন