টিআই তুহিন ও তার স্ত্রীর আরও ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ জব্দ

টিআই তুহিন ও তার স্ত্রীর আরও ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ জব্দ

ফরিদপুর জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামে আরও সাত কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর সঙ্গে আগেই জব্দ হওয়া প্রায় চার কোটি টাকার সম্পদসহ মোট ১১ কোটি টাকার সম্পদ দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের দুদকের দুই উপ-পরিচালককে এই দায়িত্ব পালনের জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ফরিদপুর জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামে আরও সাত কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর সঙ্গে আগেই জব্দ হওয়া প্রায় চার কোটি টাকার সম্পদসহ মোট ১১ কোটি টাকার সম্পদ দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের দুদকের দুই উপ-পরিচালককে এই দায়িত্ব পালনের জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক ইমরান আকন।

এর আগে গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) ফরিদপুরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জিয়া হায়দার এ আদেশ দেন।

পুলিশ কর্মকর্তা তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রীর নামে গোপালগঞ্জ ও খুলনা জেলার সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্ব পালন করবেন দুদক গোপালগঞ্জের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান এবং ঢাকা ও ফরিদপুরের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির দায়িত্ব পালন করবেন দুদক ফরিদপুরের উপপরিচালক রতন কুমার দাস। 

দুদকের ফরিদপুর জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই কার্যালয়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রীর নামে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ফরিদপুর দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইমরান আকন অনুসন্ধান করে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা ও ঢাকায়  স্থাবর ও অস্থাবরসহ প্রায় চার কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তির সন্ধান পান । এ সমস্ত সম্পত্তি  গত ৮ সেপ্টেম্বর  জব্দ করে দুদক। স্থগিত করে দেওয়া হয় তাদের ব্যাংক হিসাব।

এরপর আরও বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ইমরান আকন আয়কর নথিতে অপ্রদর্শিত সম্পত্তি হিসেবে পুলিশ কর্মকর্তা তুহিন লস্করের নামে এক কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকা মূল্যে ঢাকা শহরের মিরপুরের বিজয় রাকিন সিটি প্রজেক্টে ১২৫ বর্গফুট কার পার্কিংয়ের জায়গাসহ এক হাজার ৮৭২ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট এবং তুহিনের স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামে প্রায় ছয় কোটি টাকা মূল্যের গোপালগঞ্জ পৌরশহরের ১০ নম্বর  ওয়ার্ডের সবুজবাগ মহল্লায় ছয় তলা একটি ভবনের সন্ধান পান। 

এরপর গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এই সম্পদসহ আগে জব্দ হওয়া এই দম্পতির নামে খুলনার হাইজিং এস্টেট এলাকার গোয়ালপাড়া মৌজায় ১.৮০৫ কাঠা জমির ওপর দুই ইউনিটের পাঁচতলা বাড়ি, আনুমানিক ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের খুলনার খালিসপুরের গোয়ালপাড়া মৌজায় ১.৮০৫ কাঠা জমি, আনুমানিক ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ফরিদপুর শহরের ১১৬ নম্বর কমলাপুর মৌজায় এক হাজার ২০০ বর্গ ফুটের ফ্ল্যাট, আনুমানিক ৪০ লাখ টাকা মূল্যের শহরের ১১৯ নম্বর হাবেলি গোপালপুর মৌজায় ১২শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা মূল্যের শহরের হাবেলী গোপালপুর মৌজায় ০০.৩৫ শতাংশ জমি, ৪০ লাখ টাকা মূল্যের গোপালগঞ্জ সদরের খাটারা মৌজায় ৫.২০ শতাংশ জমি, ৯ লাখ ১৮ হাজার ২২৫ টাকা মূল্যের ওই একই মৌজায় ৭.৮০ শতাংশ এবং ৬ লাখ ১২ হাজার ২২৫ টাকায় ৫.২ শতাংশ জমিসহ মোট ১০ কোটিরও বেশি টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোক করে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের জন্য আদালতে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত সমস্ত সম্পত্তি ক্রোক করে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেন। 

এছাড়া তুহিন ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীনের নামে ব্যাংকে থাকা টাকা ও স্থায়ী আমানত বাবদ জমা ১ কোটি ৬ লাখ ১৭ হাজার ২৯১ টাকাসহ ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে দেওয়া হয়।

দুদক জানায়, তুহিন লস্করের স্ত্রী জামিলার আয়ের কোনো উৎস না থাকলেও ভুয়া ব্যবসা দেখিয়ে এই সম্পদ তিনি অর্জন করেছেন।

এ বিষয়ে টিআই তুহিন লস্কর বলেন, ঢাকায় আমার নামে কোনো ফ্ল্যাট নেই। দুদক আমাকে হয়রানি করছে।

দুদকের ফরিদপুরের উপপরিচালক রতন কুমার দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে তুহিন দম্পতির সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে এবং রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে । হয়রানি করার জন্য করা হচ্ছে  এটা সঠিক নয়।

জহির হোসেন/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *