টাঙ্গাইলে নেই আ.লীগের সাবেক এমপি-মন্ত্রীরা

টাঙ্গাইলে নেই আ.লীগের সাবেক এমপি-মন্ত্রীরা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরই এলাকা ছাড়তে শুরু করেন টাঙ্গাইলের এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা। বর্তমানে তাদের কোনো তথ্য দিতে পারছেন না কেউই। আবার অনেকেই আত্মরক্ষার্থে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। চলমান এই পরিস্থিতিতে জেলায় প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাতের ঘটনা ঘটছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরই এলাকা ছাড়তে শুরু করেন টাঙ্গাইলের এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা। বর্তমানে তাদের কোনো তথ্য দিতে পারছেন না কেউই। আবার অনেকেই আত্মরক্ষার্থে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। চলমান এই পরিস্থিতিতে জেলায় প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাতের ঘটনা ঘটছে। জানা গেছে, সারাদেশের মতো টাঙ্গাইলেও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা। গত ৪ আগস্ট টাঙ্গাইল শহরে এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা ও গুলিবর্ষণের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে টাঙ্গাইলের পরিবেশ। এতে গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশত আহত হয়। এরপরই ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর করেন। ঘটনার আগে তিনি শহরের বিবেকানন্দ স্কুল এন্ড কলেজে বসে ছিলেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে। 

এরপর আন্দোলনকারীরা টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছোট মনিরের টাঙ্গাইল পৌরসভার পূর্ব আদালত পাড়ার বাসায় হামলা, ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের আশিকপুর বাইপাসে এমপি ছোট মনিরের মালিকানাধীন দি টাঙ্গাইল ফিলিং স্টেশন ও ধ্রুব ইন রেস্তোরাতেও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ছাড়া ওইদিন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল ইসলাম আলমগীরের বাসা ও পৌরসভায় ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও আসবাবপত্রে আগুন দেওয়া হয়। হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর গত ৪ আগস্ট রাতে সার্কিট হাউসে জেলা আওয়ামী লীগের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫ জুন আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, টাঙ্গাইল-২ আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, টাঙ্গাইল-৮ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুকের ছেলে খান আহম্মেদ শুভ, টাঙ্গাইল সদরের এমপি ছানোয়ার হোসেন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, পৌর মেয়র এসএম সিরাজুল ইসমলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন তোফা, সাংগঠনিক  সম্পাদক জামিনুল রহমান মিরন ও সাইফুজ্জামান সোহেলসহ জেলার নেতারা। 

আগের দিন আলোচনা হলেও পরেরদিন আর তাদের মাঠে দেখা যায়নি। ওইদিন দুপুরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর এমপি ও নেতাকর্মীরা এলাকা ছাড়া হয়ে যায়। এরপর তারা কে কোথায়, কেউ তাদের হদিস জানে না। একাধিক নেতাকর্মীরা জানান, মন্ত্রী-এমপি বা জেলার নেতারা কে কোথায় আছেন, কেউ জানে না। কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। শুধু জেলার নেতারাই নয়, উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে এখনও অনেকেই বিদেশে যেতে না পেরে দেশেই আছেন লুকিয়ে। সুবিধামতো হয়তো বিদেশে পারি দিতে পারেন। সূত্র মতে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সর্বশেষ ২ আগস্ট তার সংসদীয় আসন টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী)-এ যান। এদিন ধনবাড়ীতে ড. আব্দুর রাজ্জাকের এপিএস আল আমিনের বিয়ের দাওয়াত খেতে আসেন তিনি। এরপর তিনি ধনবাড়ী দলীয় অফিসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওইদিনই মধুপুরে তিনি দলীয় অফিসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনাসভা করেন। এরপর ৫ আগস্টের পর থেকে তার সঙ্গে নেতাকর্মীদের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। এ ছাড়া তার বোন সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামছুন নাহার চাপাও ঈদের পর আর এলাকায় আসেননি। তিনি কোথায় আছেন সেটিও জানেন না কেউ। টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সর্বশেষ গত ৭ জুলাই দেলদুয়ার উপজেলায় এসেছিলেন। ওইদিন তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঢাকায় চলে যান। এরপর আর টাঙ্গাইলে আসেননি তিনি। এরপর তিনি বাণিজ্যিক সফরে ভারত ও সর্বশেষ ইরানে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

অভ‌িজিৎ ঘোষ/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *