টাকা পাচারের স্বর্গ বাংলাদেশ

টাকা পাচারের স্বর্গ বাংলাদেশ

প্রথম আলো

প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।

নির্বাচনের আগের বছরে ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বেশি শুল্ক ছাড় দিয়েছিল সদ্য সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। ব্যবসায়ীদের খুশি করতে এ শুল্ক ছাড়া দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদনেই এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। নির্বাচনের ঠিক আগের বছরে অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এক বছরে এত শুল্ক ছাড় আর কখনোই দেওয়া হয়নি।

এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—

প্রথম আলো

নির্বাচনের আগে ৩৪ হাজার কোটি টাকার শুল্কছাড় দেয় আওয়ামী সরকার

চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের আগের বছরে মূলত ব্যবসায়ী সমাজের সমর্থন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন খাতে শুল্ক ও কর ছাড় দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করেন এনবিআরের শুল্ক কর্মকর্তারা।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শুল্ক-কর ছাড় কমানোর শর্ত রয়েছে। এই বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থা ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের শর্ত হিসেবে কর ছাড় কমাতে বলেছে। সংস্থাটি মনে করে, শুল্ক-কর ছাড় যৌক্তিক করা প্রয়োজন। শুল্ক ও কর ছাড় যৌক্তিক করা হলে স্থানীয় উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ বাড়বে।

মানবজমিন

প্রেসিডেন্টের দুবাই কানেকশন নিয়ে নানা কৌতূহল

প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনের মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, দুবাইতে পার্টনারশিপ ব্যবসা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে রেসিডেন্সি থাকার খবরে নড়েচড়ে বসেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের দুবাই কানেকশন নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা কৌতূহল।

মানবজমিনের অনুসন্ধান বলছে, গত মার্চে সর্বশেষ দুবাই সফর করেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন। সে সময় দুই রাষ্ট্রের যথাযথ প্রটোকলে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে দুই রাত কাটান। পরিভ্রমণ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আকাশচুম্বী ভবন বুর্জ আল খলিফা। তার সম্মানে ছিল রিভার ক্রুজ এবং গালা ডিনারের আয়োজন। যেখানে আরব আমিরাতে বড় বিনিয়োগকারী প্রেসিডেন্টপুত্র আরশাদ আদনান রনিও অংশ নেন। দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র মতে, বিদেশে প্রেসিডেন্টের সহায়-সম্পত্তি থাকার তথ্যের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর সরকারের একাধিক সংস্থা বিস্তৃত তদন্ত শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

প্রথম আলো

এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু কেন লোডশেডিং

জ্বালানি নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। চাহিদাকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিবছর বড় সময় অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। দিতে হয়েছে অলস কেন্দ্রের ভাড়া। খরচের চাপ সামলাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে, সরকারের দায় বেড়েছে। অথচ তিন বছর ধরে গরম বাড়লেই লোডশেডিংয়ে ভুগতে হচ্ছে মানুষকে।

নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েও (গত ৮ আগস্ট) পড়েছে একই সমস্যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। ফলে বেড়েছে লোডশেডিং। গতকাল সোমবার গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে।

দেশ রূপান্তর

পছন্দের কর্তাদের কাঁধে চড়ানোর মাশুল

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। বিসিএস অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে বাহিনীটির প্রধানের দায়িত্ব পান। চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তাকে একই পদে ফের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় সরকার।

তবে এখানেই শেষ নয়, চুক্তির ওই মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে গত ৫ জুলাই চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইজিপি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। অবশ্য এবার আর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি তার। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট অবসরে পাঠানো হয় তাকে। আর এর এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে আট দিনের রিমান্ডে আছেন। তার প্রতি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রবল দুর্বলতা থাকায় পুলিশের রেকর্ড ভেঙে পরপর দুই দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান বলে অভিযোগ রয়েছে।

আজকের পত্রিকা

রেলেওয়ের ১৫ বছর: আড়াই টাকা ব্যয় করে ১ টাকা আয়

বছরের পর বছর লোকসান গুনছে রেল। অথচ দুই যুগের কিছু বেশি সময় আগেও এই খাত ছিল লাভজনক। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত ১৫ বছরে রেলে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি এবং লোকসান হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ রেলকে প্রতিবছর গড়ে লোকসান গুনতে হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে বর্তমানে রেলের আয়ের চেয়ে ব্যয় আড়াই গুণের বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেলওয়ের লোকসানের অন্যতম কারণ দুর্নীতি ও অপরিকল্পিত ব্যয়। এ ছাড়া বিনা টিকিটে ভ্রমণ এবং প্রায় সব ট্রেনে অর্ধেকের কম কোচ (বগি) নিয়ে চলাচলের কারণে লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে। অর্থাৎ শতভাগ কোচ নিয়ে যদি ট্রেন চলত এবং জনপ্রিয় রুটে যদি ট্রেনের সংখ্যা বাড়ত, তাহলে অপারেটিং রেশিও কমে যেত। পাশাপাশি অপারেশন বাড়াতে হবে পণ্য পরিবহনে। এতে রেলের আয় বাড়বে।

সমকাল

মশা মারতে ‘কামান দাগাচ্ছে’ না কেউ

ডেঙ্গু মৌসুম ঘিরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নানা কর্মসূচি নিয়ে সামনে এলেও এবার মশা মারতে কামান দাগাচ্ছে না কেউ! প্রজননের অনুকূল পরিবেশ পেয়ে রাজধানী তো বটেই, সবখানে এখন মশার রাজত্ব। মশক বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এডিস মশার ঘনত্ব এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ফলে প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ধীরে ধীরে মৃত্যুর তালিকাও হচ্ছে দীর্ঘ।

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি পালিয়ে থাকায় গেল এক মাস মশক নিধন কার্যক্রম কার্যত লাটে উঠেছে। মাঠ পর্যায়ে অনেকেই হাত গুটিয়ে বসে আছেন। ফলে এডিস মশার ‘হটস্পট’ বিষয়ক কোনো তথ্য তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে আসছে না। যাদের মাধ্যমে এ তথ্য কেন্দ্রে আসার কথা, সেই জনপ্রতিনিধিরা রাজনৈতিক কারণে কর্মস্থলেই যাচ্ছেন না। এর মধ্যে আবার পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের সব শীর্ষ জনপ্রতিনিধিকে পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

কালের কণ্ঠ

টাকা পাচারের স্বর্গ বাংলাদেশ

গত দেড় দশকে টাকা পাচারের স্বর্গরাজ্য ছিল বাংলাদেশ। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসনের অভাব আর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির প্রশ্রয়ে এ দেশের টাকা খুব সহজেই পাচার হয়েছে ভিনদেশে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বলছে, এ সময়ে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সরকারের অন্তত সাতটি নজরদারি সংস্থা থাকার পরও সবার নাকের ডগায় এই বিপুল অঙ্কের টাকা চলে গেছে বিদেশে।

আর এই পাচারের প্রায় ৮০ শতাংশই হয়েছে বাণিজ্যের আড়ালে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত দুর্বল শাসন ব্যবস্থা, নজরদারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা আর রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবসহ অন্তত এক ডজন কারণে টাকা পাচারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। আশার কথা হচ্ছে, অর্ন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই টাকা পাচার ঠেকানো এবং পাচার করা টাকা ফেরাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এরই মধ্যে টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সমকাল

প্লট ফ্ল্যাট গাড়ি ঘের খামার– কী নেই ওসি অপূর্বর

‘মাইরা তো আমরা ফেলছি, এখন কী করবা?’– এক পুলিশ কর্মকর্তার এমন দম্ভভরা কথার ভিডিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণে হতাহতের বিষয়ে এ কথা বলেছিলেন পল্লবী থানার সাবেক ওসি অপূর্ব হাসান। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রশ্রয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বেপরোয়া। নানা অপকর্মের মধ্য দিয়ে তিনি হয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক।

সমকালের অনুসন্ধানে রাজধানী ঢাকায় অপূর্ব হাসানের অন্তত চারটি  ফ্ল্যাট, প্রাইভেট গাড়ি ও প্লট, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় আট একর জমি, গরুর খামার ও মাছের ঘেরের তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ভাটারায় যে ফ্ল্যাটে অপূর্ব পরিবার নিয়ে থাকেন, সেই ভবনে বেনামে তাঁর আরও ৯টি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মিলেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ ও নামে-বেনামে আরও সম্পদ রয়েছে বলে তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন।

এছাড়া সত্যিই কি ভারতের ৬০ কিমি ভূখণ্ড দখল করেছে চীন?;  সীমান্তের ৩০ পয়েন্ট দিয়ে ঢুকছে রোহিঙ্গা;  স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন আন্দোলনের মূল কারণ ছিল ঘুষ-দুর্নীতি;  পাঠ্যবই থেকে বাদ যাবে ‘অতিরঞ্জিত ইতিহাস’;  মাসুদ হত্যা নিয়ে সবার মুখে কুলুপ—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *