গতকাল থেকে আশ্বিনের অতিবৃষ্টির কারণে রাজধানী বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এই জলাবদ্ধতার কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকা, উত্তরা, বিমানবন্দর এলাকায় মূল সড়কে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। কোথাও কোথাও হাঁটু পর্যন্ত পানি।
গতকাল থেকে আশ্বিনের অতিবৃষ্টির কারণে রাজধানী বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এই জলাবদ্ধতার কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকা, উত্তরা, বিমানবন্দর এলাকায় মূল সড়কে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। কোথাও কোথাও হাঁটু পর্যন্ত পানি।
এমন অবস্থায় এক হাতে ছাতা অন্য হাতে ইশারা আর মুখে বাঁশি ফুকিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে যথাসম্ভব যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি অনবরত পড়ছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সে ধারাবাহিকতায় ঝরছে বৃষ্টি। সংস্কার কাজ চলা সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পাতাল মেট্রো রেলের কাজ চলায় সংশ্লিষ্ট এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতার সঙ্গে দেখা দিয়েছে যানজট। সেখানে অতিরিক্ত ফোর্স নিযুক্ত করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে জলাবদ্ধতার কারণে বেগ পেতে হচ্ছে ট্রাফিক সদস্যদের।
তবে এর মধ্যেও সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, আইন লঙ্ঘনকারী যান ও চালকদের বিরুদ্ধে থেমে নেই ট্রাফিক পুলিশের মামলা প্রক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ঢাকা মহানগরীতে গত বেশ কয়েকদিন ধরেই যানজটে নাকাল নগরবাসী। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সবগুলো ট্রাফিক বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ।
তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাত-দিন কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। বুধবার দিনভর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ৫০০টি মামলা ও ২১ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করা টাকার মধ্যে ৬ লাখ ৬৭ হাজার ২৫০ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও অভিযানকালে ৪৯টি গাড়ি ডাম্পিং ও ২৮টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৯৬২টি মামলা ও ৩৮ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৬৪টি গাড়ি রেকার করা হয়।
ট্রাফিক গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার(ডিসি) ও অতিরিক্ত দায়িত্বে (ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগ) তারেক মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকার রাস্তা আর জলাবদ্ধতা তো হচ্ছেই। এখন তো নরমালি সড়কে ট্রাফিক চাপ বাড়ছে। তার মধ্যে বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতা বড় সমস্যা তৈরি করছে। বেশি সমস্যা হচ্ছে প্রগতি সরণি, মহাখালী বাস টার্মিনাল, আমতলী, কাকলীতে গাড়ির চাপে গতি কমে গেছে। পাশাপাশি আব্দুল্লাহপুর-উত্তরায় জলাবদ্ধতার কারণে ঝামেলা হচ্ছে। রাস্তা খারাপ তার সঙ্গে জলাবদ্ধতা। এয়ারপোর্ট এলাকা উত্তরার দিকে ওভারপাস থেকে নামতে পানি জমেছে। আমাদের ট্রাফিক সদস্যদের কাজে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য রেইনকোট, ছাতা সরবরাহ করা হয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার(ট্রাফিক) খন্দকার নজমুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুর্যোগপূর্ণ অবস্থার কারণে সবুজবাগ, যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকা, উত্তরায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে। গাড়ি চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের সদস্যরা কাজ করছে। বড় ধরনের চাপ যদিও এখনো তৈরি হয়নি।
খন্দকার নজমুল হাসান বলেন, আমাদের ট্রাফিক সদস্যরা কোথাও হাঁটু পানিতে, কোথাও কোমর পানিতে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হচ্ছে। জনগণের যে প্রত্যাশা সে পর্যায়ে আমরা হয়ত এখনো পৌঁছাতে পারিনি। তবে আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। এখানে সবারই সহযোগিতা প্রয়োজন। যিনি চালক, পথচারী সবারই সচেতনতা ও সানুগ্র সহযোগিতা কাম্য। তবেই আমরা যানজটমুক্ত শহর গড়তে পারবো।
জেইউ/এসএম