জয়পুরহাট জেলা আ. লীগের কার্যালয়সহ ২৭ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

জয়পুরহাট জেলা আ. লীগের কার্যালয়সহ ২৭ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ ২৭টি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দিনব্যাপী জেলা শহরের রেলগেট এলাকার পূর্বপাশে রেলওয়ের জায়গায় গড়ে ওঠা দোকানসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অভিযান চালায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ ২৭টি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দিনব্যাপী জেলা শহরের রেলগেট এলাকার পূর্বপাশে রেলওয়ের জায়গায় গড়ে ওঠা দোকানসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অভিযান চালায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

এই উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ঈশ্বরদী-পাকশী জোনের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুর রহিম, জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান, রেলওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আতাউর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জয়পুরহাট শহরের রেলগেট এলাকার পূর্বপাশের উত্তর দিকের অংশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন দোকানপাটসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালান রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) অফিস, ছাত্র ইউনিয়নের জেলা অফিসও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

দুপুরের পর রেলগেটের পূর্ব-দক্ষিণ অংশে অভিযান শুরু হয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই কার্যালয়ের উত্তর পাশের একটি দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর বাধার মুখে পড়তে হয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে। তারপর তারা বেছে বেছে আরও কয়েকটি দোকান উচ্ছেদ করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পৌর মার্কেটের কিছু অংশ ভাঙার সময় যুবদলের কয়েকজন নেতা বাধা দেন। তারপর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কাজ সমাপ্ত করে। দিনব্যাপী এই অভিযানকালে রেলওয়ের বিপুলসংখ্যক পুলিশ উপস্থিত ছিল। তাদের সহযোগিতা করেন রেলওয়ে রোভার স্কাউটের সদস্যরা।

রাজনৈতিক কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির জয়পুরহাট জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান বদিউজ্জামান। তিনি বলেন, প্রায় ৩৬ বছর আগে এখানে কমিউনিস্ট পার্টির অফিস ব্যক্তি নামে নিয়েছিলাম। অনেক দিন পর রেলওয়ের অফিসার এসে আমাদের কোনো নোটিশ না দিয়ে এই অফিসটি ভেঙে দিয়েছে। কাগজ আনার পর তারা কাগজ দেখতে চাননি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা বলার পরও সম্মান দিয়ে কথা বলেননি। পরে কাগজ দেখে বলে আমার দাগ নম্বর ভুল। আমরা বলেছি এই জায়গা তো রেল দিয়েছে, তাহলে ভুল তো আমার হয়নি। পরবর্তীতে তারা আমাদের অন্যত্র জায়গা দিতে চেয়েছেন।

জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রিফাত আমিন বলেন, বহু আগে থেকে আমাদের এই অফিস ছিল। আমরা বলেছি আমাদের কাগজপত্র আছে। কিন্তু তারা তা না দেখে ক্ষমতার বল দেখিয়ে আমাদের রাজনৈতিক অফিস ভেঙে দিয়েছে। এতে আমরা মনে করি এটি রাজনীতির কণ্ঠ রোধ করা। এর তীব্র নিন্দা জানাই।

পার্বতীপুর ভূসম্পত্তি বিভাগের ফিল্ড কানুনগো সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, অভিযানে ২৭টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধার করা মোট জমির পরিমাণ এক একর ১০ শতাংশ। পৌর মার্কেটে রেলের অংশের জন্য কর্তৃপক্ষ ৭ দিন সময় চেয়েছে। আর অন্য স্থাপনাগুলোতে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। অক্টোবরের পর সেগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান বলেন, সকাল থেকে শহরের রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এখানে সরকারি কাজে কোনো বাধা যেন না আসে সেটি আমরা দেখেছি। কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ঈশ্বরদী-পাকশী জোনের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, সকাল থেকেই অভিযান চালানো হয়েছে। রেলওয়ের ভূমি উদ্ধার কাজ আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে রেলওয়ের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনা রয়েছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

চম্পক কুমার/এমজেইউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *