জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ

জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ

গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আলোচিত সাবেক ভঅরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলামের রিসোর্টকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আলোচিত সাবেক ভঅরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলামের রিসোর্টকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর ‘গাজীপুরের ওসির রিসোর্টকাণ্ড : সাবেক এসপিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা’ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

ওই সংবাদে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর কমিশন উদ্বেগ প্রকাশপূর্বক স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে প্রতিবেদন দিতে বলেছে কমিশন।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান জানান, গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আলোচিত সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম এক কলেজ ছাত্রীকে রিসোর্টে রেখে রাত্রি যাপনের ঘটনায় গাজীপুর আদালতে মামলা হয়েছে। গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তা ও স্টেনোগ্রাফারের বিরুদ্ধে গাজীপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারী।

কমিশন মনে করে, এ ঘটনায় অভিযু্ক্ত ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলামসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন। এছাড়া বর্ণিত ঘটনায় গাজীপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালতে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন উদ্বেগ প্রকাশপূর্বক স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করে।

কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সুয়োমটোর বিষয়বস্তুতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ জানুয়ারি রাতে এক নারীর ফোন পেয়ে গাজীপুরের একটি রিসোর্ট থেকে তাকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। পরে ধর্ষণ মামলা থেকে রক্ষা পেতে গাজীপুরের সাবেক এসপি কাজী শফিকুল আলম ও ডিবি পুলিশের ওসি দেলাওয়ার হোসেনের পরামর্শে ওই ওসির প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে ১৮ জানুয়ারি কলেজছাত্রীকে বিয়ে করেন ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান। বিয়ের পর ওসি মিজান একদিনের জন্যও ছাত্রীর সঙ্গে সংসার করেননি এবং কোনো খোঁজখবর নেননি। ধর্ষণ মামলার আলামত নষ্ট করে গত এপ্রিলে ওই কলেজছাত্রীকে গোপনে একতরফা তালাক দেন ওসি মিজান।

প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ ঘটনায় পুলিশ হেড কোয়ার্টারে ওসি মিজানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে এসপি কাজী শফিকুল আলম তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, মিরাজুল ইসলাম ও ওসি ডিবিকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওসি মিজান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দায়সারা রিপোর্ট দেন। ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি।

এ বিষয়ে কমিশনের সুয়োমটোতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের ওসি পদে দায়িত্বরত থেকে নিজ স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও পরকীয়া করে একটি নারীকে নিয়ে রিসোর্টে যাওয়া শুধুমাত্র শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয় নয়, এটি একটি ফৌজদারি অপরাধও বটে। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মদদে বিয়ের নামে প্রহসন করে অভিযুক্তকে অপরাধ থেকে বাঁচানোর প্রবণতায় আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে বিয়ের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে তালাক প্রদান করে ভুক্তভোগীকে তার স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

এ অবস্থায়, অভিযু্ক্ত ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলামসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দায়ের হওয়া মামলার সর্বশেষ অগ্রগতি কমিশনকে অবহিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বলা হয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদনের জন্য ধার্য করা হয়েছে।

জেইউ/এসএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *