বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) আয়োজিত চিকিৎসক সমাবেশে তিনি এই দাবি জানান।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় বীর ঘোষণা দিতে হবে। তাদের ত্যাগ-কোরবানি না থাকলে হয়ত আমাদের পক্ষে এই সফলতা অর্জন সম্ভব ছিল না।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে যাচ্ছি, হতাহতদের সঙ্গে কথা বলছি। একইসঙ্গে আন্দোলনে শহীদ পরিবারগুলোতেও যাচ্ছি, তাদের সঙ্গে কথা বলছি। যতটুকু জানতে পেরেছি, যারাই এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সুতরাং একদিকে যেমন তাদের পরিবারগুলোর দায়িত্ব নিতে হবে, অন্যদিকে তাদের ত্যাগকে স্বীকৃতি দিতে শহীদদের জাতীয় বীর উপাধি দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ব্যানারে হলেও এই আন্দোলন শুধু তাদের ছিল না। এই আন্দোলনে বৈষম্যের শিকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। যেমনভাবে জীবন ঝুঁকি নিয়ে ছাত্ররা নেমে এসেছিলেন, তেমনি রিকশাওয়ালারাও নেমে এসেছিলেন। বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও নেমে এসেছিলেন। এমনকি আসরা দেখেছি বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর থেকে আমাদের মা-বোনেরাও পানি-খাবারসহ বিভিন্ন কিছু নিয়ে এসেছেন এবং সহযোগিতা করেছেন।
জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছি, আহতদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের অধিকাংশই রিকশাওয়ালা-ঠেলাওয়ালা। যারা নিহত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই এই শ্রেণির মানুষ। সুতরাং এই আন্দোলনের ফসল শুধুমাত্র ছাত্রদের হাত ধরে আসেনি, সব ধর্ম-বর্ণ আর শ্রেণি-পেশার মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে এসেছে।
চিকিৎসকদের সামাজিক ও সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের টার্গেট শুধু হাসিনার পতন নয়, ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশকে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলা। নতুন এই বাংলাদেশ গড়ে তোলায় এনডিএফকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। চিকিৎসক জাতিকে নিয়েই এই কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, এনডিএফ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
টিআই/কেএ