মাগুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে গুলিতে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বী (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ও মাগুরা-২ আসনের সাবেক এমপি বীরেন শিকদারসহ ১৩ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মাগুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে গুলিতে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বী (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ও মাগুরা-২ আসনের সাবেক এমপি বীরেন শিকদারসহ ১৩ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাতে মাগুরা সদর থানায় মামলাটি করেন নিহত মেহেদীর ভাই ইউনুস আলী। তবে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের নামের তালিকা পাওয়া গেছে।
নিহত মেহেদী হাসান মাগুরা পৌরসভার বরুণাতৈল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমীন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ রেজাউল ইসলাম, যুবলীগকর্মী পারনান্দুয়ালী গ্রামের বাসিন্দা রথী মোল্লা, বরুনাতৈল গ্রামের আজিম, যুবলীগ নেতা মীর রাশেদুল ইসলাম সুমন, পারনান্দুয়ালী গ্রামের হেদায়েত কোরাইশ, বরুনাতৈল গ্রামের আজিজুল, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শিশির অধিকারী, বরুনাতৈল গ্রামের রাকিব ও পারলা গ্রামের তৌহিদ মোল্যার নাম রয়েছে।
মামলায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ও মাগুরা-২ আসনের এমপি বীরেন শিকদারের বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতাকে হত্যার হুকুম ও মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আসামিরা সবাই আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে মামলার অভিযোগের বিষয়ে কোনো আসামির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কলিমুল্লাহ বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পর ১৩ জনের নামে মামলাটি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাগুরার সাবেক দুই এমপির হুকুম ও মদদে গত ৪ আগস্ট সকালে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বীর বাড়িতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হুমকি দিয়ে আসেন। পরে মেহেদী হাসানসহ অন্যরা মিছিল নিয়ে ঢাকা রোড এলাকায় যেতে চাইলে আসামিরা তাদের ওপর হামলা চালান। প্রথমে রাস্তায় ফেলে আসামিরা মেহেদী হাসানকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। একই সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম তার হাতে থাকা রিভলভার দিয়ে মেহেদী হাসানের বাম পাঁজরে আঘাত করেন। একই দিনে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পাশে ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন পুলিশের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান। তাকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এমজেইউ