চাঁদপুরে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড

চাঁদপুরে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড

চাঁদপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতে জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাসাবাড়িতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গত ২৭ মে জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ২৫৭ মিলিমিটার।

চাঁদপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতে জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাসাবাড়িতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গত ২৭ মে জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ২৫৭ মিলিমিটার।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে জেলায় টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

শহর ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ এলাকায় সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শহরের নাজির পাড়া, মিশন রোড আশ্রম এলাকা, প্রফেসর পাড়া, মমিন পাড়া, গুয়াখোলা, চিত্রলেখা মোড়, পালপাড়া, আলিম পাড়া, আদালত পাড়া, রহমতপুর আবাসিক এলাকা, গাজী সড়ক, ব্যাংক কলোনী, ষোলঘর, ওয়ারলেছ বাজার, বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, বাবুরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩নং কল্যাণী ইউনিয়ন পরিষদ এবং মডেল টাউন, মাদরাসা সড়কে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা। এসব এলাকার বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

এইসব এলাকার রাস্তার পাশে ড্রেন থাকার পরেও পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। কারণ বিভিন্ন জায়গায় ময়লা-আবর্জনা আটকে ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় ড্রেন ভেঙ্গে ব্লক হয়ে যায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা শহরের সড়কে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বেলা ১১টার পর থেকে বাসারবাড়ি থেকে পানি নিষ্কাশন করা হলেও রাস্তাঘাটের সড়কে বৃষ্টির পানিতে অপরিবর্তীত রয়েছে।

শহরের নাজির পাড়ার মামুনুর রশিদ বলেন, বৃষ্টিতে তাদের বাসার নিচতলায় হাঁটুসমান উঠে গেছে। গতকাল রাত থেকেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

পালপাড়া এলাকার মাজহারুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর টানা বৃষ্টি হলেও গতকাল রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তাদের বাসায়ও হাঁটুসমান পানি।

বাবুরহাট এলাকার যুবক সাইম বলেন, আমাদের এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া অনেক বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানি উঠেছে। যেসব মহল্লায় সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে সেইসব মহল্লার সঙ্গে ড্রেনরে সংযোগ করে দিলে পানি নিষ্কাশ করা হয়ে যায়। যেসব জায়গায় ড্রেন আছে তা পরিষ্কার করলে এবং যেসব জায়গায় নষ্ট হয়ে গেছে সেসব জায়গায় পুনরায় সংস্কার করেলে এসব জায়গায় আর পানি আটকে থাকবে না।

সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলগী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস ছাত্তার বলেন, টানা বৃষ্টিতে বাড়ির চারপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সড়কেরও বেহাল অবস্থা।

এর আগে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। থেমে থেমে সারা রাত বৃষ্টি ও বজ্রপাত অব্যাহত ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে শহরের সড়কগুলোতে যানবহন চলাচল কমে যায়। অনেকেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসাবাড়িতে চলে যায়।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ্ মো. শোয়েব বলেন, ৪ অক্টোবর সকাল ৯টা হতে ৫ অক্টোবর সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৫০ মিলিমিটার এবং সকাল ৬টা হতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা হিসেবে এ বছর জেলায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ২৮৩ মিলিমিটার। এর আগে গত ২৭ মে জেলায় ২৫৭ মিলিমিটার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে ।

এদিকে শিগগিরই বৃষ্টিপাত কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার সকালে প্রকাশিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে লঘুচাপ। যার প্রভাবে খুব সহসাই বৃষ্টি বন্ধ হচ্ছে না, বরং আরও কয়েকদিন এমন প্রবণতা অব্যাহত থাকার ইঙ্গিতও দিয়েছে সংস্থাটি।

আনোয়ারুল হক/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *