চলতি বছরে রংপুরে ধরা পড়েছে ৩১৭ মেট্রিক টন ইলিশ

চলতি বছরে রংপুরে ধরা পড়েছে ৩১৭ মেট্রিক টন ইলিশ

রংপুর অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। একটা সময় এসব নদ-নদীতে বিক্ষিপ্তভাবে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ত। ছিল না ইলিশের বাজার ব্যবস্থা। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে এ চিত্র পাল্টে গেছে। এখন জেলেদের জালে প্রায়ই দেখা মিলছে ইলিশ মাছ। নদ-নদী থেকে চলছে আহরণ ও বাজারজাতকরণ।

রংপুর অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। একটা সময় এসব নদ-নদীতে বিক্ষিপ্তভাবে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ত। ছিল না ইলিশের বাজার ব্যবস্থা। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে এ চিত্র পাল্টে গেছে। এখন জেলেদের জালে প্রায়ই দেখা মিলছে ইলিশ মাছ। নদ-নদী থেকে চলছে আহরণ ও বাজারজাতকরণ।

ভাগ্যলক্ষ্মী সদয় হওয়ায় এ বছর ৩১৭ মেট্রিক টন ইলিশ পাওয়া গেছে এই অঞ্চলের তিন নদী থেকে। দুই বছর আগে ইলিশ প্রাপ্তির পরিমাণ ছিল মাত্র ৭০/৮০ টন। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে পারলে রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীগুলো ইলিশের অভয়াশ্রম হতে পারে। তবে এজন্য চাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং স্থানীয় জনগণ ও মাছ ধরা জেলেদের মাঝে সচেতনতা—এমনটা মনে করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, একযুগ আগেও রংপুর অঞ্চলে ইলিশ মাছ আহরণ ছিল না। এ অঞ্চলের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীতে অনেকেই ইলিশ মাছ ধরেছে। এ অবস্থাকে মাথায় রেখে ইলিশ মাছ গবেষকরা এসব নদী থেকে ইলিশ মাছ আহরণের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এক সময় ইলিশ বলতে মনে করা হতো এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মাছ। ১০ বছর আগে এই আহরণ শুরু হয়। এজন্য মৎস্য অধিদপ্তর স্থানীয় জেলেদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, সচেনতামূলক সভা-সেমিনার করেছে। পাশাপাশি জেলেদের পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে এখন রংপুর অঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাটের নদী বেষ্টিত এলাকায় ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় এই অঞ্চলে ইলিশ প্রাপ্তির পরিমাণ কম হচ্ছে—এমনটা মনে করছে মৎস্য বিভাগ।

রংপুর মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদী থেকে সাড়ে ৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ পাওয়া গেছে। এসব ইলিশের ওজন ২৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত।

এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১৩ হাজার জেলের হাতে এ অঞ্চল থেকে ৩১৪ টন ইলিশ মাছ ধরা পড়েছিল।

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের মতো এই অঞ্চলেও ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। এ সময় জেলেদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এ ছাড়া নগদ টাকাও দেওয়া হবে। নিষিদ্ধ সময়ে এই অঞ্চলে ইলিশ ধরা বন্ধ করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অবসরপ্রাপ্ত মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা জুবায়ের আলী বলেন, ইলিশ মূলত সাগরের মাছ। যেসব নদ-নদীর সঙ্গে সাগরের যোগসূত্র রয়েছে, সেইসব নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়। রংপুর অঞ্চলে বর্ষাকালে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র খরস্রোতা হয়ে থাকে। ওই সময় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রে ইলিশ পাওয়া যায়। সাগর থেকে ইলিশ আসে ডিম পাড়তে।

নদী খনন করে নাব্যতা ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলে ইলিশের আগমন ঘটাতে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। নদীগুলোকে খরস্রোতা করতে পারলেই দেশের অন্যান্য স্থানের মতো এখানকার নদীতে ইলিশ পাওয়া যাবে।

রংপুর মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ১০ বছর আগে এই অঞ্চলে ইলিশের প্রাপ্যতা ছিল শূন্যের কোটায়। নানাবিধ উন্নয়নমূলক কর্মসূচির কারণে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। রংপুর অঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদ-নদীতে এক বছরে ৩১৭ মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়েছে। সরকারের ইলিশ নিধন বন্ধ কার্যক্রমের আওতায় এই অঞ্চলের জেলেদেরও প্রণোদনা দেওয়া হয়। ভবিষ্যতেও ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *