চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি ফেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি ফেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেছেন সদ্য প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা। এক দফা দাবিতে তারা এ আন্দোলন করছেন।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেছেন সদ্য প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা। এক দফা দাবিতে তারা এ আন্দোলন করছেন।

রোববার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে বোর্ডের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

দাবি মেনে না নেওয়ায় পরে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় দাবি মেনে নেওয়া না হলে সড়ক অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের যে ফলাফল দেওয়া হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে। আমাদের দাবি একটাই, মাধ্যমিকের ফলাফল অনুযায়ী এইচএসসির ফলাফল দেওয়া হোক।

এদিকে আন্দোলনের কারণে শিক্ষা বোর্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বোর্ড কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

আহাদ নামে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমরা আমাদের এক দফা দাবি জানিয়ে চেয়ারম্যান স্যার বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। সেদিন তিনি আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তাই আজ আমরা সকাল থেকে এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছি। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না।’

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছে করেই ফেল করানো হয়েছে। আমরা কোনোভাবে এই ফলাফল মানি না। আমাদের সাবজেক্ট কীভাবে ম্যাপিং হয়েছে, সেই বিষয়ে জানতে চাই। কেননা, পরীক্ষা দেওয়ার পরও কীভাবে অনুপস্থিত আসে?’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করব।’

এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩০ জুন। ১৬ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা ঠিকমতোই হয়েছে। এরপর প্রথমে ১৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা এবং পরে ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়। তারপর দেশে সরকার পরিবর্তনের মতো বড় ঘটনা ঘটেছে।

বিভিন্ন থানায় হামলার কারণে সেখানকার প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে বাকি পরীক্ষাগুলোর তারিখ বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়। নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ১১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে এক দল শিক্ষার্থী স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০ আগস্ট সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে এক দল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেন।

এর আগে ওই দিন দুপুরে শিক্ষা উপদেষ্টার সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা হয়। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা অর্ধেক নম্বরে হবে এবং পরীক্ষার তারিখও ১১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও ২ সপ্তাহ পিছিয়ে যাবে। কিন্তু সচিবালয়ে যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলন করছিলেন, তারা এ সিদ্ধান্ত মেনে নেননি।

আন্দোলনের মুখে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অনেকটা বাধ্য হয়েই স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল ঘোষণা করেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অনেক পরীক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কেউ কেউ এখনও হাসপাতালে ভর্তি। অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরীক্ষা বন্ধ থাকায় তারা মানসিক চাপে আছেন।

মোট কথা, পরীক্ষায় বসার মতো শারীরিক-মানসিক অবস্থায় তারা নেই। এ অবস্থায় বিকল্প উপায়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশের আবেদন জানান তারা।

বিকল্প উপায় কী হতে পারে, সেটিও বাতলে দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গেছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে খাতা মূল্যায়ন করে নম্বর দেওয়া যায়। বাকি বিষয়গুলোর জন্য এসএসসির ফলাফলের সঙ্গে সমন্বয় করে জিপিএ নির্ধারণ করা যেতে পারে। তাদের দাবি অনুযায়ী ১৫ অক্টোবর এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়।

আরএমএন/এসএসএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *