চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলরদের বেশিরভাগ এখনো কাজে যোগ দেননি। এলোমেলো হয়ে পড়েছে নাগরিক সেবা। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের বেশিরভাগ অফিস করছেন না। নগরীর ৪১ সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪ সংরক্ষিত ওয়ার্ড মিলে ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৫টি। বেশিরভাগ কাউন্সিলর কাজে যুক্ত নেই। তাদের সবাই আত্মগোপনে। মোবাইল ফোনও বন্ধ।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলরদের বেশিরভাগ এখনো কাজে যোগ দেননি। এলোমেলো হয়ে পড়েছে নাগরিক সেবা। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের বেশিরভাগ অফিস করছেন না। নগরীর ৪১ সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪ সংরক্ষিত ওয়ার্ড মিলে ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৫টি। বেশিরভাগ কাউন্সিলর কাজে যুক্ত নেই। তাদের সবাই আত্মগোপনে। মোবাইল ফোনও বন্ধ।
এতে করে নাগরিক সেবা পাচ্ছে না সেবাপ্রার্থীরা। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ, ওয়ারিশ সনদ, চারিত্রিক সনদ ও জাতীয়তা সনদ নিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন তারা। কারণ এসব সনদে কাউন্সিলরের স্বাক্ষরের প্রয়োজন। কাউন্সিলর না থাকার এসব সনদ ইস্যু করা যাচ্ছে না। তবে, কিছু কিছু ওয়ার্ডে কাউন্সিলররা অফিস করছেন।
চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় গিয়ে দেখা যায়, সেবাপ্রার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে এলেও সেবা পাচ্ছে না। এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু না থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে দৈনন্দিন কার্যক্রম।
ওয়ারিশ সনদের জন্য চকবাজার ওয়ার্ড কার্যালয়ে আসা জামাল উদ্দিন বলেন, গত দুই দিন ধরে যোগাযোগ করেছি সনদের জন্য। কিন্তু কাউন্সিলর না থাকায় সনদ পাচ্ছি না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকবাজার, আন্দরকিল্লা, লালখান বাজার, ৪ নম্বর চান্দগাঁও, ৮ নম্বর শুলকবহর, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, বাগমনিরাম ওয়ার্ডসহ অন্তত ৪০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলররা অফিস করছেন না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্দোলনের ঘটনায় চট্টগ্রামে একাধিক মামলা হয়েছে। সেখানে কাউন্সিলদেরও আসামি করা হয়েছে। তাই তারা গ্রেপ্তার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন। এছাড়া, চট্টগ্রামের সব কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ দলীয়। যার কারণে তারা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
সিটি কর্পোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চলমান পরিস্থিতি সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাই সেবাসহ দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। অনেক নথিতে মেয়র-কাউন্সিলরের স্বাক্ষর দরকার। তাদের অনুপস্থিতিতে করণীয় কী সেটিও স্পষ্ট করা হয়নি।
সোমবার (১৯ আগস্ট) বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে দেখা করবেন সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরা। তার নির্দেশনা পেলে পুরোদমে সেবা কার্যক্রম শুরু হবে বলে মনে করেছেন সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তারা।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। ওই দিন দেশ ছেড়ে যান শেখ হাসিনা। ওই দিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের বাড়ি এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলদের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা আত্মগোপনে চলে যান। তাদের অনুপস্থিতি সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী।
সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আমি নিয়মিত অফিস করছি। মানুষ নাগরিক সেবা পাচ্ছে। আবর্জনা পরিষ্কার, মশা নিধনে ওষুধ ছিটানোসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম করে যাচ্ছি। আমরা কী কী করছি, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। চিঠি আকারে কার্যক্রমের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা অফিসে আসেননি। তবে ৪-৫ দিন থেকে বেশ কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে এসেছেন। অন্তত ১০ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস করেছেন। আবার অনেকে সশরীরে অফিস না করলেও বিকল্প উপায়ে কাজ করছেন। এতে স্থানীয় পর্যায়ে সেবা পাচ্ছেন মানুষ।
কেএ