‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না চিকিৎসকের দেখা’

‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না চিকিৎসকের দেখা’

মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি হলো চিকিৎসা সেবা, বর্তমানে নানাবিধ কারণে দিন দিন মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ছুটে যান হাসপাতালে। বিত্তবানরা প্রাইভেট হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা সেবা নিতে পারলেও অধিকাংশ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের ঠিকানা সরকারি হাসপাতাল।

মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি হলো চিকিৎসা সেবা, বর্তমানে নানাবিধ কারণে দিন দিন মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ছুটে যান হাসপাতালে। বিত্তবানরা প্রাইভেট হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা সেবা নিতে পারলেও অধিকাংশ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের ঠিকানা সরকারি হাসপাতাল।

বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন রোগ নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন ৪ থেকে ৫শ রোগী। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাপত্র দায়িত্বে থাকা একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।

হাসপাতালে আসা বিভিন্ন বয়সের রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কখনো দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় সেবা না নিয়েই তারা ফিরে যেতে বাধ্য হন।

ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ, সকাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবুও দেখা মিলছে না চিকিৎসকদের।

চিকিৎসা নিতে আস এক ভুক্তভোগী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তারের দেখা পেলেও সেই রোগের বিশেষজ্ঞ না হওয়ায় তাকে পাঠানো হয় অন্য চিকিৎসকের কাছে কিন্তু সেই চিকিৎসকও নেই নিজের চেম্বারে।

সেবাপ্রত্যাশী রাবেয়া খাতুনসহ বেশ কয়েকজন রোগী বলেন, সকাল থেকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ঘণ্টা পর ঘণ্টা ধরে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো চিকিৎসকের দেখা মিলছে না।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের দেওয়া তথ্যমতে, প্রতিদিন সদর হাসপাতালে বিভিন্ন রোগ নিয়ে ৪শ থেকে ৫শ রোগী সেবা নিতে আসেন। এর মধ্যে আউটডোরে সেবা নিতে আসেন ২৭১ জন, ইনডোরে ৩০ জন ও ইমার্জেন্সিতে আসেন ৪৪ জন রোগী।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, বান্দরবান সদর হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১০০। সরকারি হাসপাতালটিতে সিনিয়র কনসালটেন্ট ১২ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৪ জন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ২৭ জনের মধ্যে রয়েছে ৬ জন, মেডিকেল অফিসার ৫০ জনের মধ্যে রয়েছে মাত্র ১১ জন।

এ ছাড়াও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট, হেলথ এডুকেটর, নার্সসহ বিভিন্ন বিভাগে আছে জনবল সংকট।

সদর হাসপাতাল ছাড়াও একই চিত্র জেলার সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।

বর্তমান সংকট কাটাতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নির্মাণাধীন সদর হাসপাতাল চালু হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে, ঠিক কবে নাগাদ এর কাজ শেষ করে জনসাধারণের সেবা গ্রহণের সুযোগ হবে এ বিষয়েও বলতে পারছেন না ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসক সংকটসহ জনবল সংকটের কথা তুলে ধরে বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা. মাহবুব রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সদর  হাসপাতালে ১০০ শয্যার জনবল পদায়ন হয়নি। সদর হাসপাতালসহ উপজেলাগুলোতে চিকিৎসকের সংকট আছে, ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

তবে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা নিরসনে তদবির করে, উপর মহলে চিটি ও টেলিফোন করেও সমস্যা সমাধানের কোনো রাস্তা তৈরি হচ্ছে না বলে স্বীকার করেন জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, হাসপাতালে জনবল সংকট থাকলেও আমাদের সেবা প্রদানের চেস্টার কোনো ত্রুটি নেই।

দীর্ঘদিনের জেলার চিকিৎসা সেবা সংকট কাটাতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান জেলার সাধারণ মানুষ।

মো. শহীদুল ইসলাম/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *