লক্ষ্মীপুরে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর বিএনপি নেতাকে গুলি ও তিনজনকে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ঘটনার ১০ বছর ১০ মাস চার দিন পর এসে এ মামলাটি করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর বিএনপি নেতাকে গুলি ও তিনজনকে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ঘটনার ১০ বছর ১০ মাস চার দিন পর এসে এ মামলাটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু বাদী হয়ে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।
বাদীর আইনজীবী আহমেদ ফেরদৌস মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান মামলাটি আমলে নিয়েছেন। তিনি মামলাটি এফআইআর নেওয়ার জন্য সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) তারেক ছিদ্দিকি, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহিদুল হক, র্যাবের সাবেক এডিজি মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, তৎকালীন এআইজি মাহফুজুর রহমান, সাবেক লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, র্যাব-১১ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর মোহাম্মদ আরিফ, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রানা, ডিএডি জাহাঙ্গির আলম, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি তাহেরপুত্র একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু, আনোয়ার সাদাত শিবলু, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক বায়েজীদ ভূঁইয়াসহ ৩৫ জন।
এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবুর উত্তর তেমুহনীতে থাকা বাসায় হামলা চালায় র্যাব। এ সময় তিনি বাসার পেছনের দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাইরে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকা তাহেরপুত্র টিপু, শিবলু ও যুবলীগ নেতা বায়েজীদের কারণে তিনি পালাতে পারেননি। পরে র্যাবের তারেক সাঈদ, আরিফ ও রানাসহ অভিযুক্তরা তাকে মারধরে করেন। একপর্যায়ে তার ডান পায়ে উরুতে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করা হয়। পরে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে তিনি প্রাণে রক্ষা পায়। একইদিন জেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ জুয়েল, বিএনপি কর্মী মাহবুব ও শিহাবকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনার নির্দেশে সেইদিন হামলা চালিয়ে বাদীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত সবাই জড়িত।
বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন সাবু বলেন, হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়ে আমি প্রাণে রক্ষা পাই। প্রাণ বাঁচাতে আমি বিদেশে পালিয়েছিলাম। তখন মামলা করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু মামলা করতে পারেনি। দীর্ঘ ১০ বছর ১০ মাস পর অবশেষে আমি মামলা করতে সক্ষম হয়েছি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মুন্নাফ বলেন, মামলাটা বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আদালতের নির্দেশনা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এফআরএস