গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে যা বললেন বাইডেন

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে যা বললেন বাইডেন

গাজায় যুদ্ধ বিরতি চুক্তির বিষয়ে সবশেষ আলোচনার পর এ বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

গাজায় যুদ্ধ বিরতি চুক্তির বিষয়ে সবশেষ আলোচনার পর এ বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, আমরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আগের চেয়ে আরও কাছাকাছি রয়েছি।

বিবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার জন্য ইরান ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে এমন উদ্বেগের মধ্যেই বাইডেন বলেছেন, চুক্তি প্রক্রিয়াকে দুর্বল করতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ এই অঞ্চলের কারো নেওয়া উচিত নয়।

তবে, এবারই প্রথম নয় এর আগেও বাইডেন বলেছেন, তিনি একটি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার কাছাকাছি পর্যায়ে আছেন। সে সময় হামাস বা ইসরায়েলি সরকার কেউই তাদের প্রতিক্রিয়ায় এতটা উৎসাহী ছিল না।

সাম্প্রতিক চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে হামাস। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ না করে ইসরায়েল বলেছে, জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে হামাসকে সম্মত করতে আমেরিকা ও মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করছে তারা।

সম্প্রতি এক যৌথ বিবৃতিতে আমেরিকা, কাতার ও মিশর জানিয়েছে, তারা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান অস্থিরতা কমিয়ে আনতে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি বিনিময় চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে।

ইসরায়েল বলেছে, যেকোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামলার সময় হামাসের নিয়ন্ত্রণে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে কয়েকজনকে ইতোমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বাকিরা গাজায় মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জিম্মিদের স্বজনরা বর্তমান আলোচনাকে গাজায় আটক জীবিতদের বের করে আনার শেষ সুযোগ হিসেবে অভিহিত করছেন।

প্রায় ১০ মাসের যুদ্ধ এবং কয়েক হাজার হতাহতের পর যুদ্ধ বিরতি চুক্তিতে সম্মত হতে ইসরায়েলের ওপর চাপ রয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান আলোচনা পুরোপুরি ভেস্তে গেলে এটি বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলবে, যা নিয়ে সবাই শঙ্কিত।

মধ্যস্থতাকারীরা দাবি করেছেন, গত দু’দিনের যুদ্ধবিরতি আলোচনা গঠনমূলক এবং ইতিবাচক পরিবেশে পরিচালিত হয়েছে।

কায়রোতে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে পুনরায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে প্রস্তাবিত শর্তাবলী কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে আগামী দিনগুলোতে কারিগরি দলগুলো কাজ চালিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির ঘটনায় গাজার অভ্যন্তরে জনগণের অবাধ চলাচল এবং গাজার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ইসরায়েলি সামরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার বিষয়ে দেশটি তার কিছু দাবি পরিবর্তন করেছে।

ইসরায়েল বলছে, তাদের অবস্থান ও মূলনীতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তাদের অবস্থান সবসময় স্পষ্ট। তারা হামাসের বিরুদ্ধে জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তিতে সম্মত হতে অস্বীকার করার অভিযোগ এনেছে।

ইসরায়েলের অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি করার আগ্রহ নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। জিম্মি মুক্তি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রাথমিক লক্ষ্য হলেও তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, হামাসের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বিজয় তার সরকারের অগ্রাধিকার।

এদিকে, হামাসের নতুন নেতা ইয়াইয়া সিনওয়ার সমঝোতার বিষয়ে কিছুটা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

আলোচনায় অংশ না নেওয়া হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বিবিসিকে বলেছেন, গত জুলাইয়ের আলোচনায় যে বিষয়ে দুই পক্ষ একমতে পৌঁছেছে, তা বর্তমানে দোহার আলোচনায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।

এই আলোচনাগুলো থেকে এটি স্পষ্ট যে, হামাস ছয় সপ্তাহের বিরতির জন্য বাইডেনের প্রস্তাবের পক্ষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি ছেড়ে দিয়েছে। এতে যুদ্ধের অবসান হতে পারে।

বাইডেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার, ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে জিম্মিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি এবং মৃত জিম্মিদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেওয়া।

তবে, হামাস এক সপ্তাহ পরে ইসরায়েলকে নতুন শর্ত আরোপের জন্য অভিযুক্ত করেছে। তবে, চুক্তির আগের সংস্করণটি পুনর্বিবেচনার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন হামাসের নেতারা।

কেএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *