খাল যেন ময়লার ভাগাড়, পরিষ্কার করলো স্বেচ্ছাসেবীরা

খাল যেন ময়লার ভাগাড়, পরিষ্কার করলো স্বেচ্ছাসেবীরা

মানিকগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র খালটি দীর্ঘদিন ধরে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত ছিল। সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে পৌরসভা এই খালটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয় একাধিকবার। পৌর কর্তৃপক্ষের ডাকে সাড়া দিয়ে অবশেষে খালটির ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে বিডি ক্লিনের ৩৬০ জন কর্মী কাজ করেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

মানিকগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র খালটি দীর্ঘদিন ধরে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত ছিল। সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে পৌরসভা এই খালটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয় একাধিকবার। পৌর কর্তৃপক্ষের ডাকে সাড়া দিয়ে অবশেষে খালটির ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে বিডি ক্লিনের ৩৬০ জন কর্মী কাজ করেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে খালটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা। এ সময় স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক ও পৌরসভার প্রশাসক সানজিদা জেসমীন, সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লিটন ঢালী, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন, পৌরসভার সচিব মো. বজলুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর পরই শুরু হয় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত খালটির ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ।

জেলা শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় কিলোমিটার। দুই পাড়ের বাসিন্দা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফেলা বর্জে খালটি পরিণত হয় ময়লার ভাগাড়ে। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার খালের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেছিল পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে নিম্নমানের কাজের কারণে সেই উদ্যোগের সুফল পায়নি পৌরবাসী। বিগত ২০২২ সালে ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে খালটির সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় থমকে যায় সেই কাজ।

পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া খালটির ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে দৃষ্টিনন্দন করতে পৌর কর্তৃপক্ষের ডাকে সাড়া দিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন ৩৬০ জন কর্মী নিয়ে আজকে সকাল থেকে খাল পরিষ্কারের কাজে নামে।

জেলা শহরের গোলাম ছারোয়ার ছানু নামে একজন বলেন, খালটি সংস্কার ও ময়লা-আবর্জান পরিষ্কার করে একটি দৃষ্টিনন্দন খালে রূপান্তর করা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। তবে আজকে বিডি ক্লিনের মাধ্যমে খালটির ময়লা পরিষ্কার করা হয়েছে, এটি খুবই ভালো কাজ। তবে এই কাজটি করার কথা ছিল পৌর কর্তৃপক্ষের।

তিনি আরও বলেন, বিগত ২০০৮ সালের দিকে খালটি সৌন্দর্য বর্ধনে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পৌরসভা। ওই প্রকল্পে ১১ কোটি টাকার মতো কাজ করা হলেও নগরবাসী কোনো সুফল পায়নি। এরপর আবারও ২৮ কোটি টাকার ব্যয়ে খালটি সংস্কার ও খালের দুইপাড় সৌন্দর্য বর্ধনে পৌর কর্তৃপক্ষ প্রকল্প নেয়। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই কাজের ঠিকারদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা পলাতক থাকায় কাজটিও থেমে যায়। আজকে বিডি ক্নিনের মাধ্যমে খালটি পরিষ্কার করা হলো। আগামীতে আমাদের পৌরবাসীকে এই কাজের সুফল ধরে রাখতে হবে এবং খালে কোনো ধরনের ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

বেসরকারি বিদ্যালয় সাউথ-ইস্টের শিক্ষার্থী ও বিডি ক্নিনের কর্মী নুসরাত জাহান লামিয়া বলেন, বিডি ক্লিন সংগঠনটির কর্মীরা সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ময়লা-আবর্জনাযুক্ত খাল, ডোবা, নদী বা জলাশয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা বিডি ক্লিন কাজ করি। আমরা সারা দেশের ৫৭টি জেলা টিম এবং ১৫৭টি উপজেলা টিম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কাজ করছি। আজকে মানিকগঞ্জ এসেছি, এখানে একটি খাল পরিষ্কার করার জন্য। খালটির ময়লা-আবর্জনা আমরা পরিষ্কার করে শহরবাসীকে একটি পরিচ্ছন্ন খাল উপহার দেবো। তবে পরবর্তীতে এই খালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব পৌরবাসীকেই নিতে হবে। তাহলেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।

স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক ও পৌরসভার প্রশাসক সানজিদা জেসমীন বলেন, ধারাবাহিকভাবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখতে পৌরবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। আজকে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিডি ক্লিন খালটির ময়লা-আবর্জনায় ভাগাড়ে পরিণত হওয়া খালটি পরিষ্কার করে দিচ্ছে। পরিষ্কারের পর খালে যেন আর ময়লা না ফেলা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কাজের গাফিলতি পাওয়া গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

সোহেল হোসেন/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *