কানাডা ভারতের ভৌগলিক অখণ্ডতায় বিশ্বাস করে এবং এর প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন রোববার রাজধানী অটোয়াতে এক অনুষ্ঠানে খালিস্তান ইস্যুতে কানাডার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
কানাডা ভারতের ভৌগলিক অখণ্ডতায় বিশ্বাস করে এবং এর প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন রোববার রাজধানী অটোয়াতে এক অনুষ্ঠানে খালিস্তান ইস্যুতে কানাডার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
মরিসন বলেন, “ভারতের ভৌগলিক অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ সমর্থন আমাদের রয়েছে। এটি পুরোপুরি পরিষ্কার এবং কোনো সংশয় এখানে নেই। ভারতের অখণ্ডতাকে অবশ্যই আমাদের সম্মান করতে হবে। ভারত এক এবং এটিই সত্য।”
ভারতের বিচ্ছন্নতাবাদী খালিস্তানি আন্দোলনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এবং কানাডার নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে গত বছর ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েনে জড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথম ভারতের অখণ্ডতা নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল কানাডা।
কানাডার খালিস্তানপন্থি শিখদের সংগঠক ও আধ্যাত্মিক নেতা হরদীপ ১৯৭৭ সালে ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলা থেকে দেশটিতে গিয়েছিলেন, পরে সেখানাকার নাগরিকত্বও অর্জন করেন। ২০২৩ সালের ১৮ জুন ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বৃহত্তম শহর ভ্যানকুভারের শহরতলী এলাকা সারেতে একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন হরদীপ সিং নিজ্জর।
ভারতের অন্যতম বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন খালিস্তানি টাইগার ফোর্স এবং শিখস ফর জাস্টিসের কানাডা শাখার সংগঠক ও নেতা হওয়ার কারণে নয়াদিল্লির একজন তালিকাভুক্ত ফেরার সন্ত্রাসীও ছিলেন হরদীপ। দু’টি সংগঠনই ভারতে নিষিদ্ধ।
এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতকে সরাসরি দায়ী করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে দেওয়া এক ভাষণে ট্রুডো বলেন, তার দেশের গোয়েন্দারা হরদীপ হত্যায় ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছেন। এ ঘটনাকে কানাডার সার্বভৌমত্বের জন্য তীব্র অবমাননাকর বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
নয়াদিল্লি অবশ্য এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘মনগড়া’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে ট্রুডোর এ অভিযোগের পর নজিরবিহীন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিল নয়াদিল্লি এবং অটোয়া। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, কানাডার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটাতে দেশটির আগ্রহী হওয়ার ইঙ্গিত।
প্রসঙ্গত, ভারতের পর শিখদের সবচেয়ে বড় কমিউনিটি কানাডায় অবস্থিত। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে খালিস্তানপন্থি নেতা-সংগঠক এবং সমর্থকদের সংখ্যাও প্রচুর। তাদের উপস্থিতি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে কানাডার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এটা ভয়ানক, তবে আইন বহির্ভূত নয়। এমন কিছু ব্যাপার সবসময়ই আপনার আশে-পাশে থাকবে যেগুলো আপনি দেখতে চাইবেন না, কিন্তু প্রচলিত আইন মেনে সেসব বাতিলও করতে পারবেন না। কানাডার আইনে বাকস্বাধীণতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”
সূত্র : এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ