আইরিস-টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েনের মাধ্যমে জার্মান সেনাবাহিনী ইউরোপে সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করার লক্ষ্যে আরও এক পদক্ষেপ নিয়েছে। বুধবার এই পদক্ষেপ নেয় দেশটি। এছাড়া জার্মান চ্যান্সেলর রুশ হুমকি সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন।
আইরিস-টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েনের মাধ্যমে জার্মান সেনাবাহিনী ইউরোপে সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করার লক্ষ্যে আরও এক পদক্ষেপ নিয়েছে। বুধবার এই পদক্ষেপ নেয় দেশটি। এছাড়া জার্মান চ্যান্সেলর রুশ হুমকি সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন।
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের আগে জার্মানির সামরিক ক্ষমতা ধাপে ধাপে এতটাই দুর্বল হয়ে গিয়েছিল যে, যুদ্ধের সূচনার সময় ইউক্রেনকে সহায়তা এবং ন্যাটোর সুরক্ষার প্রশ্নে জার্মানির অসহায় অবস্থা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সংসদে ‘সাইটেনভেন্ডে’ বা যুগান্তকারী পরিবর্তনের উল্লেখ করে প্রতিরক্ষা খাতে বিশাল অংকের এককালীন ব্যয়ের ঘোষণা করে সেই পরিস্থিতি বদলানোর উদ্যোগ নেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে সেনাবাহিনীর অবস্থার কিছুটা উন্নতি শুরু হয়।
বুধবার এই প্রথম জার্মানির ভূখণ্ডে আইরিস-টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল দেশটির সেনাবাহিনী।
রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে জার্মানি ইতোমধ্যে একাধিক আইরিস-টি সিস্টেম সরবরাহ করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুধু ইউক্রেনের ওপর হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত না হয়ে কোনো এক সময়ে ন্যাটোর সঙ্গেও সরাসরি সংঘাতের পথ বেছে নেবেন বলে শলৎস মনে করেন।
বুধবার তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে রাশিয়া সমরসজ্জা বাড়িয়ে চলেছে। বিশেষ করে রকেট ও ক্রুজ মিসাইলের ক্ষেত্রে রাশিয়া বেশি সক্রিয় হচ্ছে। পুতিন নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিগুলো অমান্য করে কালিনিনগ্রাডেও ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছেন, যা বার্লিন থেকে প্রায় ৫৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
জার্মান চ্যান্সেলরের মতে, সেই হুমকির জবাব না দেওয়া অবহেলার সমান।
রাশিয়ার হুমকির মোকাবিলা করতে জার্মানি বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ইউরোপীয় ‘স্কাই শিল্ড’ নামের উদ্যোগের আওতায় ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা প্রতিহত করতে দূরপাল্লার অস্ত্র মোতায়েন করা হচ্ছে। জার্মান সেনাবাহিনী ২০২৭ সালের মধ্যে ৯৫ কোটি ইউরো মূল্যের ছয়টি আইরিস-টি এসএলএম সিস্টেম মোতায়েন করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে।
ইউক্রেনকে এমন চারটি সিস্টেম সরবরাহ করার পর আরও আটটি পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে। শলৎস মনে করিয়ে দেন, ইউক্রেনে মোতায়েন করা এই সিস্টেম ইতোমধ্যে আড়াইশোর বেশি রকেট, ড্রোন ও ক্রুজ মিসাইল ধ্বংস করে অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ইউরোপীয় স্তরে প্রতিরক্ষা আরও জোরদার করতে ডিফেন্স সিস্টেমের পাশাপাশি নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার বাড়ানোর ওপরেও জোর দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে ‘বিপজ্জনক ফারাক’ দূর করা জরুরি বলে শলৎস মনে করেন।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে মার্কিন প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে ২০২৬ সাল থেকে জার্মানিতে টোমাহক ক্রুজ মিসাইলের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কথা ঘোষণা করেছে।
টিএম