‘কষ্ট হয়েছে সংসার ভাঙিনি, এখন দম্পতিরা মাসে ডিভোর্স লেটার পাঠায়’

‘কষ্ট হয়েছে সংসার ভাঙিনি, এখন দম্পতিরা মাসে ডিভোর্স লেটার পাঠায়’

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ক্রমেই বাড়ছে। যে ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় উপ-মহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আশা ভোঁসলে।

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ক্রমেই বাড়ছে। যে ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় উপ-মহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আশা ভোঁসলে।

সম্প্রতি এই শিল্পীকে রবি শঙ্করের সঙ্গে একটি আলাপচারিতায় অংশ নিয়েছেন। যেখানে অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে এত দ্রুত সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করতে দেখা গেছে তাকে।

আশা ভোঁসলের কথায়, যদিও তার জীবনেও এই সমস্যা ছিল। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়েছিল। তবুও তিনি বিয়ে ভাঙার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেননি কখনও।

আলাপচারিতায় বর্তমান প্রজন্মের প্রেম পড়া, প্রেম ভাঙা এবং বিবাহবিচ্ছেদের কারণ আশা ভোঁসলের কাছে জানতে চান রবি শঙ্কর। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবন টেনে আনেন এই গায়িকা।

আশা ভোঁসলে জানান, স্বামী আরডি বর্মনের সঙ্গে তার সমস্যা হতো। এ নিয়ে বিরক্তও হতেন। কিন্তু খুব বেশি হলে রাগ করে মায়ের কাছে চলে যেতেন। তবে কখনো ডিভোর্সের চিন্তাও তার মাথায় আসেনি।

এ সময় রবি শঙ্করকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আশা ভোঁসলে বলেন, ‘আজকাল শুনতে পাই, দম্পতিরা প্রতি মাসে ডিভোর্স লেটার পাঠায়। গুরুদেব, এমনটা কেন ঘটছে?’ এ প্রশ্নের জবাবে রবি শঙ্কর বলেন, ‘আপনি গান গেয়ে সবাইকে আনন্দ দিচ্ছেন। সৃষ্টিকর্তার উপরে আপনার বিশ্বাস আছে, কষ্ট সহ্য করা এবং সমস্যার মোকাবিলা করার শক্তিও আপনার আছে। কিন্তু আজকালের মানুষজনের কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা নেই বললেই চলে।’  

বর্তমান প্রজন্ম দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নেয় বলে মন্তব্য করেন আশা ভোঁসলে। তার মতে— ‘আমি আমার জীবনের অধিকাংশ বছর এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়েছি, অনেক মানুষকে দেখেছি। এখনকার প্রজন্মের মতো এত দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিতে আগে দেখিনি। আমার মনে হয়, তারা পরস্পরের প্রতি দ্রুত ভালোবাসা অনুভব করে এবং তারা দ্রুত বিরক্ত হয়ে যায়। সম্ভবত, এ কারণে বিবাহবিচ্ছেদের হার বেড়েছে।’ আশা ভোঁসলের এ বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে রবি শঙ্কর বলেন, ‘আজকাল আকর্ষণ ভালোবাসাকে ছাড়িয়ে গেছে।’

এ সময়ের নারীদের সমালোচনা করে আশা ভোঁসলে বলেন, ‘আজকালের নারীরা সন্তানধারণকে বোঝা মনে করেন। সম্ভবত, এটি নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে যেমন বাস্তবতা, তেমনি মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরও। মাত্র ১০ বছর বয়সে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। আমার তিনটি সন্তান ছিল। তাদের বড় করেছি, বিয়ে দিয়েছি, এখন আমার নাতি-নাতনি রয়েছে। আমি আমার স্বামীকে ছাড়াই একহাতে এসব সফলভাবে সামলেছি। পেশাগত কাজ নিয়ে যখন ব্যস্ত ছিলাম তখন আমি এসব করেছি। ওই সময়ে আমি দিন-রাত কাজ করেছি।’

আশা ভোঁসলে দিদি লতা মঙ্গেশকরের সেক্রেটারি ৩১ বছর বয়সী গণপতরাও ভোঁসলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন। যখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। তিনি তার পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেন এবং তাদের তিন সন্তানও ছিল। 

১৯৬০ সালে এই দম্পতি আলাদা হয়ে যান। এরপর ১৯৮০ সালে আর ডি বর্মণকে বিয়ে করেন আশা। ১৯৯৪ সালে মারা যান শিল্পীর স্বামী।

এনএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *