কলেজে যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত

কলেজে যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত

কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিন লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষকের ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ঘটনার পর কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন মোসলেম উদ্দিন।

কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিন লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষকের ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ঘটনার পর কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন মোসলেম উদ্দিন।

তবে লাঞ্ছিতের অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের অভিযুক্ত শিক্ষকরা দাবি করেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মোসলেম উদ্দিন যোগদান করতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়াসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে কাজ করেছেন মোসলেম উদ্দিন। তবে তারা সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেননি।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ আজমল গণি অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম। এরপর ২ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিনকে কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়।

কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টার পর মোসলেম উদ্দিন কলেজে গেলে কিছু শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তারা অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় অন্য শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। এরপর নতুন অধ্যক্ষকে কলেজ থেকে বের করে দেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অধ্যক্ষ যোগদানের জন্য আবারও কলেজে যান। তখনও অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগানো দেখতে পান। অফিসের লোকজনের সহায়তায় তালা খুলতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। এ সময় অধ্যক্ষ তার কক্ষের তালা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা জানতে পেরেছেন নতুন অধ্যক্ষ সরাসরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন। কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের কারণে অধ্যক্ষ নিয়োগ পেয়েছেন। তাই স্বৈরাচারী সরকারের কোনো দোসরকে ক্যাম্পাসে চান না তারা।

অভিযোগ অস্বীকার করে মোসলেম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে একবার বদলি হয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময় হানিফসহ (মাহবুব উল আলম) তার চাচাতো ভাইয়ের বাধার কারণে যোগদান করতে পারেননি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার আমি। আমার ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছিল আওয়ামী লীগের লোকজন। সে ঘটনায় আমি মামলাও করেছিলাম। তাহলে আমি আওয়ামী লীগের দোসর কীভাবে হলাম? বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে কাজ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবেন না। আমি আন্দোলনে পক্ষে ছিলাম। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। 

মোসলেম উদ্দিন অভিযোগ করে আরও বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খায়রুল ইসলামের ইন্ধনে তার সহযোগী ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল হক, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রওশন আলী, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মফিজ উদ্দিন ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রবিউল হোসেনের প্ররোচনায় আমাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খায়রুল ইসলাম বলেন, মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকায় শিক্ষার্থীরা তাকে যোগদান করতে দেননি। ওই সময় তিনি রুমের তালা ভাঙার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে তাকে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছেন। অধ্যক্ষের করা অভিযোগ সঠিক নয়।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) শারমিন আখতার বলেন, সহযোগিতা চেয়ে মৌখিকভাবে বিষয়টি অধ্যক্ষ জানিয়েছেন। যেহেতু সরকারি প্রতিষ্ঠান, সেহেতু তাদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ভিন্ন। আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়টি দেখভাল করতে পারি। প্রশাসনিক ব্যবস্থা উনার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

রাজু আহমেদ/পিএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *