এক যুগ পর ফেনী বিএনপির বাধাহীন সমাবেশ

এক যুগ পর ফেনী বিএনপির বাধাহীন সমাবেশ

শেখ হাসিনার পতনের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ এক যুগের বেশি ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির রাজনীতিতে যেন সুবাতাস বইছে। সারা দেশের ন্যায় গত কয়েকদিন নানা কর্মসূচিতে মুখর রয়েছে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জেলা ফেনী। 

শেখ হাসিনার পতনের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ এক যুগের বেশি ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির রাজনীতিতে যেন সুবাতাস বইছে। সারা দেশের ন্যায় গত কয়েকদিন নানা কর্মসূচিতে মুখর রয়েছে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জেলা ফেনী। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের প্রাণ কেন্দ্র ট্রাংক রোডের শহীদ মিনারে দুদিনের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে জেলা বিএনপি।  দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গণহত্যার বিচারের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। 

বুধবার ও বৃহস্পতিবার অবস্থান কর্মসূচি শেষে ১৬ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিকে ঘিরে সকাল থেকে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হন দলীয় নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ সময় পর বড় বাজারের গণ্ডি পেরিয়ে শহরের প্রাণ কেন্দ্র ট্রাংক রোডে এমন আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা। অবস্থান কর্মসূচিতে দিনব্যাপী বক্তব্যে নেতাকর্মীরা সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জেলা বিএনপির শীর্ষ এক নেতা বলেন, এই জনপদ সবসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের দাপটে রাজনীতির কারণে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলাম। হামলা-মামলা, নানা অত্যাচার নির্যাতনে দলীয় বেশিরভাগ কর্মসূচি বড় বাজারের ইসলামপুর রোডস্থ কার্যালয়ের সামনেই আয়োজন হতো। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্টের পতনের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন এক স্বাধীনতা পেয়েছি। ট্রাংক রোডে এমন বড় আয়োজনে অংশ নিতে পেরে অনেক আনন্দিত। 

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ট্রাংক রোডে এসে কর্মসূচি পালন করবো এটি তারাও (আওয়ামী লীগ) কখনো ভাবেনি। একটি বিপ্লবের মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন আয়োজনের সুযোগ করে দেওয়ায় মহান আল্লাহর কাছেও শুকরিয়া আদায় করছি। 

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। গণতন্ত্র এখন কিছুটা পুনরুদ্ধার হলেও এটি রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব। ফেনীর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়-ভীতির কারণে প্রধান সড়কে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা এখন সকল রাজনৈতিক দল নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরতে চাই। 

এদিন বিকেলের দিকে অবস্থান কর্মসূচির সমাপনী বক্তব্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, কেউ এই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করবেন না। তারা বাংলাদেশকে নতুন করে স্বাধীন করেছে। যারা তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছেন তারা এমন কোনও অপকর্ম বাকি নেই যা করেননি। অতীতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা না গেলেও এখন প্রশাসন মামলা নেবে। এই বিষয়ে আমরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।

বাহার বলেন, খালেদা জিয়ার জন্মদিন একদিন পিছিয়ে ১৬ তারিখ পালন করা হবে। সেখানে শুধুমাত্র দোয়া অনুষ্ঠান হবে। আতশবাজি, কেক কাটা বা অন্য আয়োজন করা যাবে না। এছাড়া সরকারি স্থাপনায় হামলা বা ভাঙচুর করা যাবে না। হায়নার দল দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এজন্য এমন কোনও কাজ করা যাবে না যাতে আমাদেরও পলায়ন করতে হয়। 

বক্তব্যে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারি বলেন, সকলে মিলে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ একটি ফেনী গড়তে চাই। রাজার পুত্র না হয়েও যারা হাজার কোটি টাকার বাড়ির মালিক হয়েছেন বা অস্ত্র হাতে নিয়েছেন ফেনীবাসী তাদের চায় না।  

দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশ নেন। 

তারেক চৌধুরী/এমএসএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *