‘এই রাস্তায় এক যুগে এক টুকরো মাটি পড়েনি, ইট-পাথর তো দূরের কথা। নির্বাচন এলে প্রার্থীরা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনের পর আর মনে থাকে না। এই রাস্তার জন্য কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন, কৃষিপণ্য নিতে পারছেন না। বাচ্চারা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি মরার খাট পর্যন্ত নেওয়া যায় না।’
‘এই রাস্তায় এক যুগে এক টুকরো মাটি পড়েনি, ইট-পাথর তো দূরের কথা। নির্বাচন এলে প্রার্থীরা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনের পর আর মনে থাকে না। এই রাস্তার জন্য কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন, কৃষিপণ্য নিতে পারছেন না। বাচ্চারা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি মরার খাট পর্যন্ত নেওয়া যায় না।’
পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মুচির পুল বাজার এলাকার রাস্তাটির দুর্দশা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন স্থানীয় হানিফ মৃধা (৫৫)।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকা রাস্তাটির দুর্দশার কথা জানান।
তারা জানান, মাটির রাস্তাটি নিয়ে এই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। প্রতিদিন তিন ইউনিয়নের সাত থেকে আটটি গ্রামের পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করেন। এ ছাড়া শারিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শারিকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামিয়া হোসাইনিয়া ময়দান মাদ্রাসা, বড় আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শারিকখালী নূরানী তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসাসহ শহরমুখী শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এ রাস্তা ব্যবহার করেন।
বছরের প্রায় সবসময় পানি জমে রাস্তাটি কর্দমাক্ত অবস্থায় থাকে। ফলে চলাচলের সময় মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীদের জামা-কাপড় ও বই-খাতা নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া কৃষিপণ্য, অসুস্থ রোগী ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
এসএম সোহান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। অনেক স্থানে রাস্তার মাটি খালের মধ্যে পড়েছে। জোয়ারের পানি রাস্তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে ফসলের মাঠে প্রবেশ করছে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় হাঁটুপানি জমেছে।
কলেজ শিক্ষার্থী দীন ইসলাম বলেন, জন্মের পর এই রাস্তায় মাটি দিতে দেখিনি। মেরামত, সংস্কার বা পাকা করা তো দূরের কথা। মেম্বার-চেয়ারম্যানের বাড়ি এই এলাকায় না হওয়ায় তারা সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেন না। একটু বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যায়, স্কুল-কলেজে যাওয়ার মতো অবস্থা থাকে না।
‘সড়কটি পাকা হলে জেলা শহরের সঙ্গে স্থানীয়দের যাতায়াত সহজ হবে। সাধারণ মানুষ শহরমুখী হলে তাদের উপার্জন বাড়বে। পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হবে। কৃষিপণ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে শহরে পৌঁছানো যাবে। সর্বোপরি রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ উপকৃত হবেন। তাই জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি পাকা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি’- বলেন হানিফ মৃধা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসেন আলী বলেন, ‘এ সংক্রান্ত সমস্যার কথা এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের জানাননি। এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি আমাদের কাছে উপস্থাপন করেননি। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তিনি রাস্তাটি পাকা করতে স্থানীয়দের আবেদন করারও আহ্বান জানান।
মো. রায়হান/