ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যুক্ত হয়ে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়ে প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আজকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তিনি। মতবিনিময় সভার প্রথম দিনেই উপদেষ্টাকে পরিকল্পনা কমিশনের আশু করণীয়, করণীয় ও এডিপি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) আবদুল বাকী।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যুক্ত হয়ে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়ে প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আজকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তিনি। মতবিনিময় সভার প্রথম দিনেই উপদেষ্টাকে পরিকল্পনা কমিশনের আশু করণীয়, করণীয় ও এডিপি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) আবদুল বাকী।
সোমবার (১৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শুরু হয়।
সভার শুরুতেই উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক সরকারের মতো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প আর থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি নতুন যে প্রজেক্টগুলো আসবে, সেগুলোও একনেকে যাওয়ার আগে বিচার-বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন এ অর্থনীতিবিদ।
সদস্য আবদুল বাকী পরিকল্পনা কমিশনের জন্য ‘আশু করণীয়’ বিষয়ে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এনইসি/একনেক পুনর্গঠন প্রয়োজন; জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বিবেচনার জন্য একনেকে উপস্থাপন; জলবায়ু সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ব্যতীত যেহেতু অন্য প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থায়ন সীমিত হয়ে পড়বে, সেহেতু জলবায়ু সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণে গুরুত্ব দিতে হবে। আগামী বছরের জুনে ২৬৫টি (বিনিয়োগ প্রকল্প ২৩৯টি, সমীক্ষা প্রকল্প সাতটি, কারিগরি প্রকল্প ১৯টি) এবং ২০২৬ সালের জুনে ৮০০টি (বিনিয়োগ প্রকল্প ৭৩৯টি, সমীক্ষা প্রকল্প ১৩টি, কারিগরি প্রকল্প ৪৮টি) প্রকল্প সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এসব প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য অগ্রাধিকার ক্রম নির্ধারণ করতে হবে।
কমিশনের করণীয় বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে; এমটিবিএফ-এ নির্ধারিত সিলিং অনুসরণ করে প্রকল্প গ্রহণ করা; যথাযথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং পরিবেশগত সমীক্ষার সুপারিশের আলোকে প্রকল্প দলিল প্রণয়ন করা; অর্থবছরের শুরুতে কর্মপরিকল্পনা ও ক্রয়পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কার্যাদি যথাসময়ে শুরু করা এবং পরামর্শকদের নিয়োগ নিশ্চিতকরণ; খাদ্য নিরাপত্তা অধিকতর নিশ্চিতকল্পে অধিক সেচ প্রকল্প গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান নিশ্চিত করা প্রয়োজন; নতুন সড়ক নির্মাণ ও বিদ্যমান সড়ক প্রশস্তকরণে যথাযথ স্টাডিপূর্বক সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেতে পারে; সম্পদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আপাতত রাস্তা/কালভার্ট/ব্রিজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন প্রকল্প গ্রহণ সীমিত করে বিদ্যমান রাস্তা/কালভার্ট/ব্রিজসমূহের রক্ষণাবেক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন; প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং প্রকল্প ঋণ ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে পরিকল্পনা কমিশনের এই সদস্য বলেন, ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিতে সম্পৃক্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত কোন প্রমিত মানদণ্ড নেই এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানদণ্ড মেনে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি পরিচালিত হচ্ছে না; প্রত্যাশিত মানের সমীক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমটিবিএফের প্রাপ্ত সিলিং যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। এ কারণে অর্থায়নের নিশ্চয়তা গ্রহণ ব্যতীত প্রকল্প গৃহীত হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব/জটিলতা ও বৈদেশিক ঋণ/অনুদান ব্যবহারে সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি।
এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে বার বার প্রকল্প সংশোধন; অর্থবছরের শুরুতে কর্মপরিকল্পনা ও ক্রয়পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কার্যাদি যথাসময়ে শুরু না করা; টেন্ডার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা, প্রকল্প পরিচালকদের সক্ষমতার অভাব এবং বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট অর্থছাড়ে দীর্ঘসূত্রিতা এডিপি বাস্তবায়ন অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে জানান আবদুল বাকী।
এসআর/কেএ