ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর আর্থিক বিভাগের প্রধান নিহত

ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর আর্থিক বিভাগের প্রধান নিহত

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় লেবাননভিত্তিক ইসলামি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর আর্থিক বিভাগের প্রধান নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিবৃতির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় লেবাননভিত্তিক ইসলামি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর আর্থিক বিভাগের প্রধান নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিবৃতির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

সোমবার রাতে সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে তিনি নিহত হয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে আইডিএফ। নিহতের নাম প্রকাশ করেনি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

আইডিএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে ইরান তার তেল বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ নিয়মিত হিজবুল্লাহকে প্রদান করে। তেহরানের কাছে থেকে এই অর্থ সংগ্রহ এবং তা হিজবুল্লাহর তহবিল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন নিহত ওই ব্যক্তি। এছাড়া তিনি গোষ্ঠীটির ৪৪০০ নম্বর ইউনিটের শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন তিনি। হিজবুল্লাহর এই ইউনিটটি সিরিয়ায় অবস্থান করে।

আইডিএফের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি এক বার্তায় বলেছেন, “গত বেশ কয়েক বছর ধরে হিজবুল্লাহর প্রধান তহবিল কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছিলেন ওই কমান্ডার।”

এদিকে পৃথক এক বিবৃতিতে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার রাজধানী দামেস্কে একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। এতে গাড়িটিতে থাকা চালক এবং একজন যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছন। তবে নিহতের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও।

ইরানের সমর্থন ও মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। লেবাননভিত্তিক এই গোষ্ঠীটি ইরানের প্রত্যক্ষ মদতে ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই গোষ্ঠীটি ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের অপর পাশেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল। এ অঞ্চলটি হিজবুল্লাহর প্রধান ঘাঁটি এবং গোষ্ঠীটির অধিকাংশ সামরিক স্থাপনার অবস্থান এখানে। তবে ফিলিস্তিন, সিরিয়া, জর্ডান এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও হিজবুল্লাহর শাখা রয়েছে। বস্তুত, সামরিক স্থাপনা, যোদ্ধার সংখ্যা এবং মজুতকৃত অস্ত্রের পরিমাণের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলও। গত এক বছরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫ শতাধিক। তবে আইডিএফের দাবি, এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯৪০ জন হিজবুল্লাহ কমান্ডার ও যোদ্ধা রয়েছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এতে গোষ্ঠীটির চেইন অব কমান্ডের সর্বোচ্চ স্তর প্রায় ভেঙে পড়েছে।

বিমান অভিযান পর্বের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফের স্থল বাহিনী। এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ বলেছিল, ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে সীমিত ও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে। তবে কতদিন এ অভিযান চলবে, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা ইঙ্গিত এখনও দেয়নি আইডিএফ।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে লেবাননে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

শনিবারের বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছিল, দক্ষিণ লেবাননে গত প্রায় এক মাসের অভিযানে হিজবুল্লাহর ১২০টিরও বেশি সামরিক স্থাপনা, বেশ কিছু সুড়ঙ্গ এবং ২০টি অস্ত্রাগার ধ্বংস করেছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *