রংপুর মেডিকেল কলেজের (রমেক) নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। রোববার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে ‘সচেতন নাগিরক, সাবেক ও বর্তমান মেডিকেল শিক্ষার্থী’ ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজের (রমেক) নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। রোববার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে ‘সচেতন নাগিরক, সাবেক ও বর্তমান মেডিকেল শিক্ষার্থী’ ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার যাকে শাস্তি দিতে বদলি করে সেই মাহফুজার রহমান কীভাবে দোসর হয়। শুধুমাত্র শেখ হাসিনা সরকারের প্রশাসনের কথায় সায় না দেওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে দিনাজপুরে বদলি করা হয়েছিল। সেই চিকিৎসককে দোসর ফ্যাসিস্ট বলা হয় তা প্রতিহিংসামূলক ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। রমেকের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা. মো. মাহফুজার রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ পদে যোগদানে যেভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তা মেধার বিরুদ্ধে এক ধরনের নতুন বৈষম্য।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্য দূর করতেই মেধার মূল্যায়ন করছেন। মাহফুজার রহমান তার মেধা ও যোগ্যতায় রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছেন। সরকার তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তাকে অধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি দিয়েছে। কিন্তু মাহফুজার রহমান অধ্যক্ষ হওয়ায় বিগত সরকারের আওয়ামী লীগের দোসররা সুবিধা নিতে পারবে না বলেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তুলে তাকে রংপুর থেকে অন্যত্র সরানোর পাঁয়তারা করছে। মাহফুজার রহমানকে রমেকের অধ্যক্ষ পদে যোগদানে বাধা দিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
মানববন্ধনে হাজী কল্যাণ সংস্থার সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে এবং রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন হাজী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবু সাঈদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আকবর বাদল, মিস্ত্রিপাড়া মসজিদের সাবেক ইমাম জয়নাল আবেদীন, মৌলভীবাজার সিনিয়র আলিম মাদরাসার সভাপতি মোশাররফ হোসেন সরকার, গজঘণ্টা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান শাহীন, কান্ডারি বহুমুখী সমবায় সমিতির সহসভাপতি আজহারুল ইসলাম, মেডিকেল শিক্ষার্থী জান্নাতুল, মাহামুদ ,আজিজুর রহমানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
হাজী কল্যাণ সংস্থার সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ডা. মাহফুজার রহমান কোনো রাজনীতি করেনি। যার ফলে যোগ্যতা থাকা সত্যেও এতো দিন পদায়ন পাননি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে মূল্যায়ন করে যোগ্যতার ভিত্তিতে রংপুর মেডিকেলে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করেছে। সরকারি সিদ্ধান্ত সবার মেনে নেওয়া উচিত। রংপুর মেডিকেল কলেজের উন্নয়নে, হাসপাতালের উন্নয়নে মাহফুজার রহমানের দরকার। কিন্তু তাকে উৎখাত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে একটি চক্র। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু বলেন, মাহফুজার রহমান রংপুরের সন্তান। যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকার তাকে পদোন্নতি দিয়েছে। আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান রাজিবুল ইসলাম গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে নিজে বলেছিলেন সে সময়কার অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষসহ অন্যান্য সহকর্মী তাকে রিপোর্ট তৈরিতে সহযোগিতা করেছিল। পরবর্তী উপাধ্যক্ষ থেকে অধ্যক্ষ পদে মাহফুজার রহমান পদন্নোতি পেলে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান রাজিবুল ইসলাম তার কথা পরিবর্তন করে বলেন- সে সময়কার উপাধ্যক্ষ অধ্যপক ডা. মো. মাহফুজার রহমান তাকে সহযোগিতা করেননি। এ থেকে স্পষ্ট এটি ষড়যন্ত্র। এতে স্বার্থান্বেষী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। মাহফুজার রহমান অধ্যক্ষ থাকলে তারা অনিয়ম দুর্নীতি করতে পারবে না। তাই তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে তাড়াতে নানামুখী ষড়যন্ত্র, মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২৯ অক্টোবর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ থেকে অধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি পান ডা. মাহফুজার রহমান। এর পরদিনই বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী, ছাত্র-জনতার ব্যানারে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবি তুলে বিক্ষোভ করা হয়। এ দিন অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর