ইসরায়েলের সঙ্গে টানাপোড়েনের জের মধ্যপ্রাচ্যে অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির কোনো আকাঙ্ক্ষা ইরানের নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘশি। তবে তিনি এও বলেছেন যে ইসরায়েল যদি সত্যিই হামলা করে, সেক্ষেত্রে তা মোকাবিলা করার পূর্ণ প্রস্তুতি ইরানের রয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে টানাপোড়েনের জের মধ্যপ্রাচ্যে অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির কোনো আকাঙ্ক্ষা ইরানের নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘশি। তবে তিনি এও বলেছেন যে ইসরায়েল যদি সত্যিই হামলা করে, সেক্ষেত্রে তা মোকাবিলা করার পূর্ণ প্রস্তুতি ইরানের রয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানী তেহরানে এক মত বিনিময় সভায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা এর আগে অনেক বার বলেছি যে ইরান কখনও মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে চায় না। তবে এখনকার বাস্তবতায় একটি কথা স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে আমরা যুদ্ধ ভয় পাইনা। এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি আমাদের আছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের সেনাসদস্যরা প্রস্তুত।”
তবে আব্বাস আঘাশি ইসরায়েলের সঙ্গে আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে না জড়ানোর পক্ষে বললেও গত সোমবার ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) এক কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজকে জানিয়েছিলেন, ইসরায়েলে হামলা সংক্রান্ত অন্তত ১০টি পরিকল্পনা প্রস্তুত রেখেছে আইআরজিসি।
প্রসঙ্গত, ইরান এবং ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের দুই চিরবৈরী দেশ। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সমর্থন ও মদতপুষ্ট যেসব সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী রয়েছে, সেগুলোর প্রত্যেকটির লক্ষ্য রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে ধ্বংস করা।
তবে দু’দেশের বৈরিতা আরও বৃদ্ধি পায় ২০২৩ সালে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে। গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখনও চলছে।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে ইরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র ইসলামিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। জবাব দিতে শুরু করে ইসরায়েলও। উভয়পক্ষের সংঘাতে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই হিজবুল্লাহর সদস্য এবং লেবাননের নাগরিক।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে হিজবুল্লার বিরুদ্ধে হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করে ইসরায়েল। দেশটির বিমান বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহসহ গোষ্ঠীটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডার। এক কথায়, গত দুই সপ্তাহে হিজবুল্লাহর চেইন অব কমান্ড ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েল।
প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলা চালানোর পর ১ অক্টোবর ভোর থেকে সেখানে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের স্থল বাহিনী। ওই দিন রাতেই ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান।
গত ৩ অক্টেবর কাতারের রাজধানী দোহায় এক ব্রিফিংয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তার দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। তবে ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিন এবং লেবাননে সামরিক অভিযান বন্ধ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে ইরান আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে।
সূত্র : আরটি
এসএমডব্লিউ