ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধান খেতে মাজরা পোকার আক্রমণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। কীটনাশক প্রয়োগেও পোকা দমন না হওয়ায় ধানের কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। কৃষকরা বলছেন, এ বছর অতিরিক্ত গরমে জমিতে দেওয়া কীটনাশক কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ।
শনিবার সদর উপজেলার সালান্দর, মাদারগঞ্জ, রায়পুর, বিলপাড়া, গৌরিপুর, গড়েয়া ও বেগুনবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, আমন খেতের গাছে থোড় এসেছে। কিছু আগাম জাতের ধান থেকে শিষ বের হয়েছে। এ সময়ে কেউ ধানখেতে কীটনাশক, কেউবা সার ছেটাচ্ছেন। কেউ ব্যস্ত আগাছা পরিষ্কারে।
জেলার সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি এলাকার কৃষক মনসুর আলী স্বপন জানান, এখনও ধানের গাছ থোড় পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিবছর তিনবার বালাইনাশক ছিটালেই আর প্রয়োজন পড়ে না। বেশি হলে কখনো চার বার দিতে হয়েছে। এবার গাছের এখনো শিষ বের হয়নি। এরই মধ্যে তিনবার বালাইনাশক দিতে হয়েছে। আরও অন্তত তিনবার না দিলে এবার ফসল ঘরে তুলতে পারবো না।
সদরের বিলপাড়া গ্রামের কৃষক নেন্দলা রায় বলেন, মাত্র ধানের থোড় বের হচ্ছে। এ মুহূর্তে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এর প্রতিকার না করা হলে আমাদের মতো বর্গা চাষিদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
পাশের গ্রামের কৃষক হাসান আলী বলেন, প্রতিবছর বর্গা চাষ, পরিচর্যা, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে। এতে আমাদের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। তার ওপর পোকার আক্রমণ দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে।
জেলার হরিপুর উপজেলার আমগাঁও এলাকার কৃষক ফজলে আলী বলেন, আবাদের শেষ সমায়ে হঠাৎ ধানের শিষ কেটে দিচ্ছে পোকা। এতে করে শিষ সাদা হয়ে বের হচ্ছে। নিজের ৬ বিঘা জমিতে ৯ হাজার টাকা খরচ করে চারবার স্প্রে করেছি। এতেও পোকা দমন হচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, তাপ প্রবাহে পরিবর্তন হয়েছে মাজরা পোকার ধরনের। যদিও এই সময়ে ধানগাছে মাজরা পোকার আবির্ভাব ঘটে। পোকা দমনে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে কৃষি উপসহকারীগণ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূল এবং রোগবালাই থেকে ফসল রক্ষা করা গেলে এবারও ধানের বাম্পার ফলন হবে।
আরিফ হাসান/এনএফ