বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদকে ছাড়া প্রথম ক্লাস করলেন তার সহপাঠীরা। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ১২তম ব্যাচের মাস্টার্সের প্রথম ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। আবু সাঈদ ছিলেন ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদকে ছাড়া প্রথম ক্লাস করলেন তার সহপাঠীরা। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ১২তম ব্যাচের মাস্টার্সের প্রথম ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। আবু সাঈদ ছিলেন ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
ক্লাসের বড় একটি সময় আবু সাঈদকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করা হয়। এ সময় তার সহপাঠীরা আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন।
আবু সাঈদের সহপাঠী রুহুল বলেন, আবু সাঈদের স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। আজকে মাস্টার্সের প্রথম ক্লাস ছিল। ক্লাসের জন্য মেস থেকে বের হওয়ার সময় বার বার ওর কথা মনে পড়ছিল। ও ছিল খুবই অমায়িক। ওর মতো কেউ আর জিজ্ঞাসা করে না কেমন আছিস? পড়াশোনা কেমন হচ্ছে?
তিনি বলেন, আবু সাইদের একটা স্মৃতি বার বার মনে পড়ে। সে শহীদ হওয়ার তিন দিন আগে হঠাৎ বলেছিল আমি কি বেশি চাপ নিচ্ছি। আমি সেদিন বলেছিলাম কেউ সামনে থেকে লিড না দিলে বেশি ছাত্র থাকবে না। সে দিন আমার কথা শুনে ওর মধ্যে যে উদ্দীপনা দেখেছিলাম তা বলে বুঝাতে পারব না।
সহপাঠী হুমায়রা বলেন, আবু সাঈদ ছাড়া ক্লাসে বসতে হবে তা কখনো ভাবতে পারিনি। আমাদের কিছু বন্ধু ১ম বর্ষেই চলে গেছে কিন্তু আবু সাঈদ এভাবে চলে যাবে তা কখনোই ভাবিনি।
আরেক সহপাঠী সোনিয়া বলেন, আবু সাঈদের সঙ্গে বেশির ভাগ গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট করতাম। এখন কোনো অ্যাসাইনমেন্ট করতে হলে ওকেই বেশি মিস করব।
সহপাঠী সোহাইব বলেন, বাসা থেকে বা ছুটিতে কোথাও থেকে আসলে আবু সাঈদই প্রথম জিজ্ঞাসা করতো কেমন আছিস, পড়াশোনা কেমন হচ্ছে? ওর সঙ্গে কত মজা করেছি যা ভোলার নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুশরিফুর জিলানী বলেন, শহীদ আবু সাঈদ ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিল। সে বিপ্লবী হিসেবে যে খ্যাতি লাভ করেছে তেমনি ছাত্র হিসেবেও বিনয়ী, নম্র, ভদ্র, নিয়মিত ও মেধাবী ছাত্র ছিল। তাকে ছাড়াই তার সহপাঠীরা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাস শুরু করছে। তাকে আমরা আর ক্লাসে পাচ্ছি না। এটি শিক্ষার্থীদের মনে যেমন রক্তক্ষরণ হচ্ছে, শিক্ষক হিসেবে আমাদেরও মনে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে।
শিপন তালুকদার/আরএআর