আজ বিশ্ব চিঠি দিবস

আজ বিশ্ব চিঠি দিবস

আজ বিশ্ব চিঠি দিবস। প্রতি বছর ১ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস’ পালিত হয়। এই দিনটি চিঠি লেখার গুরুত্ব এবং সেই ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উদযাপন করা হয়।

আজ বিশ্ব চিঠি দিবস। প্রতি বছর ১ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস’ পালিত হয়। এই দিনটি চিঠি লেখার গুরুত্ব এবং সেই ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উদযাপন করা হয়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে সর্বপ্রথম অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক রিচার্ড সিম্পকিনের হাত ধরেই এই দিবসের প্রচলন শুরু হয়।

মূলত, চিঠি লেখার ঐতিহ্য একসময় ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির আগ্রাসনে এই চর্চা ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে। একসময় মানুষ চিঠি লিখে নিজেদের মনের ভাব, অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতেন। চিঠির মাধ্যমে ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলো আরও ঘনিষ্ঠ এবং গভীর হতো। একটি হাতের লেখা চিঠি ছিল ব্যক্তিগত স্পর্শের প্রতীক, যা আজকের ডিজিটাল বার্তায় পাওয়া যায় না। 

অপরদিকে প্রিয়জন ও পরিজনের কাছে লেখা প্রতিটি চিঠিই ছিল চিন্তাশীলতা ও ধীরগতি মিশ্রণ। চিঠি লেখার প্রক্রিয়াটি ছিল মন্থর এবং চিন্তাশীল। চিঠি লিখতে গেলে মানুষকে তার চিন্তাগুলোকে সুন্দরভাবে সাজাতে হতো। ধীরে ধীরে সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের অভিজ্ঞতা এবং চিন্তাভাবনার গভীরতা ফুটে উঠতো। এছাড়া প্রাচীন চিঠিগুলো শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয় বরং ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকেও মূল্যবান ছিল। অনেক ক্ষেত্রে চিঠি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর সাক্ষী ছিল এবং এই চিঠিগুলো আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচিত হত। অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বের চিঠি আজও ইতিহাসবিদদের জন্য মূল্যবান দলিল হিসেবে কাজ করছে।

দেশীয় সংস্কৃতিতে আবহমান কাল থেকেই সংযোগ ও সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে চিঠি বিবেচিত হয়ে আসছে। আগেরদিনে দূরত্বের ব্যবধান ঘোচানোর জন্য এই চিঠিই ছিল প্রধান মাধ্যম। বিদেশে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য চিঠি ছিল একমাত্র ভরসা। এর মাধ্যমে দূরত্বের মধ্যেও সম্পর্কগুলো টিকে থাকত এবং গভীরতা হতো। আবার চিঠির উত্তর পাওয়ার জন্য যে অপেক্ষার প্রহর গোনা হতো, তা ছিল একটি আলাদা অভিজ্ঞতা। আগের দিন যারা চিঠি পাঠিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করতেন তারা বলছেন, আজকের দ্রুত যোগাযোগের যুগে সেই অপেক্ষার মাধুর্য এবং উত্তেজনা আর অনুভূত হয় না।

তবে বর্তমান ডিজিটাল যুগে ইমেইল, মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে চিঠি লেখার চর্চা অনেকটা হারিয়ে গেছে। মানুষ এখন সহজ এবং ত্বরিত মাধ্যমের দিকে ঝুঁকে পড়েছে, যার ফলে চিঠির সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে।

আরএইচটি/এসএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *