আইনের শাসন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম নিয়ামক

আইনের শাসন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম নিয়ামক

মৌলিক অধিকারগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সম্ভব মানবাধিকার সুরক্ষা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

মৌলিক অধিকারগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সম্ভব মানবাধিকার সুরক্ষা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেছেন, নাগরিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা ও সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে মানবাধিকার কর্মীদের কার্যাবলী ইতিবাচকভাবে দেখে এবং প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

সোমবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, ইউএনডিপি ও সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সভায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানবাধিকারকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। দুদিনব্যাপী এই সভায় আজ সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান উপস্থিত মানবাধিকার কর্মীদের দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারগুলোও নিশ্চিত করতে মানবাধিকার কর্মীদের কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে, কারণ একটি অপরটির পরিপূরক এবং কোনো একটির অবর্তমানে মানবাধিকার সংরক্ষণ সম্ভব নয়। নানা সীমাবদ্ধতা ও বাধা থাকলেও আমাদের আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রসর হতেই হবে।

দেশের একজন নাগরিক প্রকৃতপক্ষেই ক্ষমতায়িত ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন এ অধিকারগুলো নিশ্চিত হলে। আমাদের সংবিধানের ৭ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। মানবাধিকারকর্মীদের মিলিত প্রয়াসে জনগণকে ক্ষমতায়িত করা এবং সবার মানবাধিকার সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে যথাযথ অবদান রাখা দায়িত্ব। আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই তা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক গুম বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। যা দেশের মানবাধিকার সুরক্ষায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। নিঃসন্দেহে গুম হওয়া বেআইনি, নির্যাতনমূলক এবং এটি মানবাধিকারকে চরমভাবে লঙ্ঘন করে। আমরা আশা করব সরকার দ্রুত এর অনুসমর্থন করবে এবং বিষয়টি আমাদের অভ্যন্তরীণ আইনে সম্পৃক্ত হবে। দুর্ভাগ্যবশত মানবাধিকার কমিশন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি তদন্ত করতে পারে না, মানবাধিকার কমিশন শুধু সে বিষয়ে সরকারকে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলতে পারে। আইন শক্তিশালী করতে এ বিষয়ে সংশোধন আনা যেতে পারে। 

আলোচনাকালে গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান বলেন, দেশের জনগণের স্বার্থে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়মিত মানবাধিকারকে উচ্চ অবস্থানে প্রকাশ করতে হয়। জনগণের মধ্যে মানবাধিকার বিষয়ক সচেতনতা তৈরি ও লঙ্ঘনের ঘটনা তুলে ধরা এবং দেশে মানবাধিকার সংস্কৃতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতাপূর্ণ কাজ সকলের কাম্য। গণমাধ্যমকে শক্তিশালী ও স্বাধীন করতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো দূর করতে হবে।

তিনি মানবাধিকার সংরক্ষণে যেসব প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিবর্গ কাজ করছে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অগ্রসর হতে এবং পরস্পরের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো বৃদ্ধিতে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সমাজে মানবাধিকার সংরক্ষণ নির্ভর সুশীল ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মানবাধিকার কর্মীরা। আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক এবং কমিশনের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আরফান আশিক।

জেইউ/জেডএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *