অঘোর মন্ডলকে ক্রীড়াঙ্গনে শেষ শ্রদ্ধা

অঘোর মন্ডলকে ক্রীড়াঙ্গনে শেষ শ্রদ্ধা

অঘোর মন্ডলের জীবনের বড় অংশ কেটেছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। সেই স্টেডিয়ামে শেষবারের মতো এলেন নিথর দেহে। বৃষ্টিস্নাত রাতে অঘোর মন্ডলকে হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ক্রীড়াঙ্গন ও গণমাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।

অঘোর মন্ডলের জীবনের বড় অংশ কেটেছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। সেই স্টেডিয়ামে শেষবারের মতো এলেন নিথর দেহে। বৃষ্টিস্নাত রাতে অঘোর মন্ডলকে হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ক্রীড়াঙ্গন ও গণমাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। কয়েক দশক ধরে অঘোর মন্ডলের সঙ্গে এই সংগঠকের সম্পর্ক। অঘোরের মরদেহের সামনে দাড়িয়ে ববি বললেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটে অঘোর মন্ডলের অবদান রয়েছে। ক্রিকেট ও ক্রিকেট বোর্ডের উন্নয়নে অনেক পরামর্শ দিতেন।’

বাংলাদেশের অন্যতম কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ কামরুন নাহার ডানা। অঘোরের প্রয়াণে বেশ শোকাহত তিনি, ‘আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট অঘোর। এত দ্রুত চলে গেল। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে অনেক ভাবত অঘোর। একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি হারালাম আমরা।’

অঘোর মন্ডলকে শেষবারের মতো দেখতে এসেছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘হাসপাতালে থাকাবস্থাতেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। ক্রীড়াঙ্গনের যে কোনো তথ্য জানতে অঘোর দা’কে জিজ্ঞেস করতাম। তিনি বেশ নির্ভুল ভাবে তথ্য দিতেন। তার মতো এত মেধাসম্পন্ন সাংবাদিক আমরা খুব স্বল্প সময়ে হারালাম।’

দৈনিক দেশ রুপান্তরের সম্পাদক মোস্তফা মামুন। দেশের অন্যতম শীর্ষ জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক হলেও তার সাংবাদিকতার ক্যারিয়ার শুরু ক্রীড়া রিপোর্টিংয়ে। অঘোর মন্ডল নব্বইয়ের দশকে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক ছিলেন তার উদাহরণ দিয়েছেন মামুন, ‘ভোরের কাগজ ছেড়ে শুভ্র দা, পবিত্র দা, আমি ও সাইফুর রহমান খোকন প্রথম আলোতে। অঘোর দা যেন আমাদের সঙ্গে আসেন এজন্য তখন রাতে আমরা তার বাসাতেও গিয়েছি। কারণ আমাদের শঙ্কা ছিল আমরা আসলেও একা অঘোর দা থাকলেও আমরা পিছিয়ে পড়তে পারি।’

অঘোর মন্ডল ভোরের কাগজে ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন অনেক দিন। সেই ভোরের কাগজ থেকে বাংলাদেশের অনেক নামী ক্রীড়া সাংবাদিক তৈরি করেছেন অঘোর মন্ডল। এখন দেশের প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক সাইদুজ্জামান, রাকিবুল হাসান, মাসুদ পারভেজ, আপন তারিক, জাহিদ চৌধুরি, বর্ষণ কবীরসহ আরো অনেকেরই হাতেখড়ি তার হাত ধরে। বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি এটিএম সাইদুজ্জামান। তিনি অঘোর মন্ডলকে তার শিক্ষক হিসেবেই আখ্যায়িত করলেন, ‘আসলে দাদার সঙ্গে এত এত স্মৃতি। সংক্ষেপে বলা সম্ভব নয়। তিনি একাধারে আমার সহকর্মী, অগ্রজ এবং শিক্ষক।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশন, বিএসজেএ, ক্রীড়া লেখক সমিতি, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন অঘোরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম থেকে অঘোর মন্ডলের মরদেহ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নেয়া হয়। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাসার কিছুক্ষন অবস্থান করে মরদেহ পোস্তগোলা শ্মশান ঘাটে দাহ হবে।

অঘোর মন্ডল স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। বড় কন্যা সম্প্রতি পড়াশোনা সমাপ্ত করেছেন। ছোট কন্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

এজেড/এইচজেএস 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *