ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন (৫ আগস্ট) গাজীপুরের শ্রীপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন যুবদল কর্মী জুয়েল মিয়া (৩৬) । প্রথম থেকেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবার এখন দিশাহারা।
ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন (৫ আগস্ট) গাজীপুরের শ্রীপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন যুবদল কর্মী জুয়েল মিয়া (৩৬) । প্রথম থেকেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবার এখন দিশাহারা।
জুয়েলের স্বজনরা জানান, ১৬ বছরের সংসার জীবনে ১২ বছর পর জন্ম নেয় জুয়েলের একমাত্র ছেলে জুবায়েদ। ৪ বছরের শিশু জুবায়েদের কাছে তার বাবাই যেন সব কিছু। দীর্ঘদিন পর সন্তানের মুখ দেখতে পেয়ে তাদের সংসারে ফিরে এসেছিল সুখ। কিন্তু সেই সুখ কপালে সইল না তার স্ত্রীর। জুবায়েদের বাবা নেই আজ ১১ দিন হয়ে গেল, অথচ সে এখনো টের পায়নি তার বাবা আর নেই। মৃত্যু কি জিনিস তা এখনো বুঝতে পারেনি ছোট্ট জুবায়েদ। জুবায়েদের আশা বাবা আসবে। বাবার কথা বলতেই বলে, ‘বাবা এখন অফিসে, রাতে আসবে, আমার সাথে ঘুমাবে।’ প্রতিদিন রাতে বাবার জন্য অপেক্ষা করে ঘুমাতে যায় সে। নিজের বালিশের পাশে সাজিয়ে রাখে বাবার বালিশটাও।
নিহত জুয়েল মিয়া ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার মিংধই কাকদাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিন মেয়ে দুই ছেলের মধ্যে জুয়েল বড়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা গ্রামে বসবাস করে স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
জুয়েলের বাবা আব্দুল হাই বলেন, জুয়েল ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার আয়েই তাদের সংসার চলতো। হঠাৎ করে জুয়েলের মৃত্যুতে পুরো পরিবার দিশাহারা। সামনে এখন অজানা পথ।
তিনি আরও বলেন, ১৬ বছর আগে জুয়েল বিয়ে করে। বিয়ের ১২ বছর পর জুবায়েদের জন্ম হয়। বাবার খুব আদরের ছিল জুবায়েদ। অথচ সে এখনো বুঝতেই পারছে না তার বাবা নেই। জুয়েলের খুব ইচ্ছে ছিল ছেলেকে ইসলামি স্কলার বানানোর। হঠাৎ জুয়েলের মৃত্যুতে ছেলে জুবায়েদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়েই সংশয় তৈরী হয়েছে।
গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জুয়েলের ভায়রা আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, জুয়েল আমার সঙ্গে রাজনীতি করতেন। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার হটানোর আন্দোলনে নিয়মিত অংশ নিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে মাওনা পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে বিজিবির গুলিতে নিহত হন জুয়েল। তার পরিবারটির সামনে এখন অন্ধকার। তার স্ত্রী ও ছেলে আমায় আশ্রয়ে আছে।
শিহাব খান/আরএআর