সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ ৯৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ ৯৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী (দ্রুত বিচার) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ জহুর আহমদের ভাই হাফিজ আহমদ। তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের এরোয়াখাই গ্রামের নাজির আহমদের ছেলে।

মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট, সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, রণজিত সরকার, সাবেক পৌর মেয়র নাদের বখত, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, পুলিশের এএসপি রাজন কুমার দাস, সদর থানা পুলিশের ওসি খালেদ চৌধুরী, এসআই রিয়াজ আহমদ, সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপংকর কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রিপন, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে মঞ্জুর আহমদ খন্দকার, শংকর চন্দ্র দাস, রেজাউল আলম নিক্কু, আবুল কালাম, এহসান উজ্জ্বল, অমল কর, প্রদীপ রায়, রিগ্যান, আপ্তাব উদ্দিন, কুদ্দুস ওরফে বেল কদ্দুস, ফরিদ আহমদ ইমন, সুয়েব আহমদ চৌধুরী, জুবের আহমদ অপু, আলামিন রহমান, ফজলে রাব্বী স্মরণ, সজীব রঞ্জন দাশ সল্টু, লিখন আহমদ, জিসান এনায়েত রেজা, আহসান জামিল আনাস, লুৎফুর রহমান লিটন, জহির আলী, ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রঞ্জিত চৌধুরী রাজন, জনি হোসেন, হাসানুজ্জামান ইস্পাহানী, ফজলুল হক, ফরহাদ, সাজন আহমদ, আবিদুর রহমান তারেক, নীরব, মেহের, আনোয়ার মিয়া আনু, হাসনাত হোসাইন প্রমুখ। এ ছাড়া মামলায় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের জেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ উল্লিখিত আসামিরা সাবেক সংসদ সদস্যের নির্দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি, বোমা, সাউন্ড গ্রেনেডসহ বিভিন্ন দেশী অস্ত্রসহ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের হুকুমে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এ হামলার ঘটনা ঘটায়। হামলায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি অনেকে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত হন। আহতদের অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এই ঘটনার বিচারের দাবিতে আজ দুপুরে আহত জহুর আলীর ভাই হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আদেশের জন্য রাখেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাদীর ভাই গুরুতর আহত জহুর আলী ও রিপন মিয়াসহ আহতদের শহরের পুরাতন বাসস্টেশনে গুলি করে এবং রামদা দিয়ে কুপিয়ে পেট্রলবোমা ও ককটেল ফাটিয়ে বিনা উসকানিতে আহত করেন। হামলাকারীরা কেউ সশরীরে ছিলেন, কেউ হুকুম দিয়েছেন। এ ছাড়া আহতরা হাসপাতালে গেলে আওয়ামী চিকিৎসকগণের অসযোগিতায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। এসব ঘটনার ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভিতে রয়েছে।

এই হামলার সঠিক বিচার ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আদালতের বিচারক নির্জন মিত্র মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখে দিয়েছেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হক ও মাসুক আলম ঢাকা পোস্টকে  জানান, গত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থী এবং আইনজীবীসহ সাধারণ জনতার ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বর্বরোচিত এ হামলায় আহতরা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফ্যাসিস্ট সরকার যে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে তার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে দ্রুত বিচার আইনে এই মামলা দায়ের করেছি। আশা করি আদালত ন্যায়বিচার করবেন এবং মামলা রুজুর জন্য আদেশ দেবেন।

রায়হান আলীম তামিম/এমজেইউ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *