গোলাম রব্বানী ছোটন ও নারী ফুটবল যেন সমার্থক শব্দ। ২০২২ সালে তার কোচিংয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়। এবার সদ্য সমাপ্ত কাঠমান্ডু নারী সাফে সাবিনাদের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন না থেকেও ছিলেন আলোচনায়। সকল আলোচনা-সমালোচনা ছাপিয়ে বাংলাদেশ আবার চ্যাম্পিয়ন।
গোলাম রব্বানী ছোটন ও নারী ফুটবল যেন সমার্থক শব্দ। ২০২২ সালে তার কোচিংয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়। এবার সদ্য সমাপ্ত কাঠমান্ডু নারী সাফে সাবিনাদের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন না থেকেও ছিলেন আলোচনায়। সকল আলোচনা-সমালোচনা ছাপিয়ে বাংলাদেশ আবার চ্যাম্পিয়ন।
বাংলাদেশের টানা শিরোপা জয়ে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে বিশেষ কৃত্তিত্ব দিলেন সাবেক কোচ ছোটন, ‘সে একজন প্রকৃত লিডার। ২০২২ সালেও বলেছি, সাবিনা শুধু ক্যাপ্টেন নয়, সে লিডার। ২০২৪ সালে সে নিজেকে আরো প্রমাণ করেছে। তার পারফরম্যান্স, বয়স নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে। পাশাপাশি দলীয় অনেক বিষয় দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে দলকে খেলায় ফোকাস রাখতে সাহায্য করেছে। এই শিরোপার অন্যতম কৃত্তিত্ব সাবিনার।’
২০২২ সালের কাঠমান্ডু সাফ ছিল সাবিনাময়। সর্বোচ্চ গোলদাতার পাশাপাশি হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও। এই সাফে স্ট্রাইকার সাবিনা খুব বেশি উজ্জ্বল নন। চার ম্যাচে করেছেন জোড়া গোল। দু’টিই সেমিফাইনালে ভুটানের বিপক্ষে। এরপরও সাবিনার পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালোই ছোটনের দৃষ্টিতে, ‘সাবিনা এখনো বাংলাদেশ দলের সেন্টার। সে এই টুর্নামেন্টে ভালোই খেলেছে। ভারতে বেনবেন, বালাদেবী ৩৫ বছরে এখনো খেলছে। সাবিনা মাত্র ৩০। আরো কয়েক বছর খেলার সামর্থ্য তার রয়েছে।’
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সেরা এটা আবার প্রমাণিত। তবে মারিয়া-মণিকাদের এশিয়ান পর্যায়ে প্রাধান্য বিস্তারের সামর্থ্য রয়েছে, ‘সাবিনা ছাড়া প্রায় সবার বয়স ২২-২৪। মারিয়া-ঋতুপর্ণারা ২-৩ বছর পর আরো বেশি পরিপক্ব হবে। এই মেয়েদের বর্তমানের চেয়ে আরো অনেক বেশি ভালো খেলার সামর্থ্য রয়েছে। এজন্য সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে। বর্তমান কমিটি আশা করি বিষয়টি দেখবে।’
বৃটিশ কোচ পিটার বাটলার বাংলাদেশে এসেছিলেন মূলত বাফুফে একাডেমির দায়িত্ব নিয়ে। কয়েক মাস পর তাকে সাবিনাদের কোচ করা হয় সাফকে ঘিরে। নানা বিতর্ক-সমালোচনা থাকলেও দিন শেষে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন। তাই বাটলারকেও সাফল্যের অংশীদার হিসেবে রাখলেন ছোটন, ‘দল সফল কোচের অবশ্যই কৃত্তিত্ব। তার অনুশীলন, পরিকল্পনা অবশ্যই কাজে এসেছে।’
গত সাফের চেয়ে এই সাফে বাংলাদেশ বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়েছিল। ট্যাকিনক্যালের পাশাপাশি সাবিনাদের ট্যাকটিক্যাল উন্নতিও হয়েছে অনেক। খেলার ধরন নিয়ে ছোটনের মন্তব্য, ‘বাংলাদেশ যে কয়টি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেই হয়েছে। এখানেও তাই হয়েছে। তবে গত বারের চেয়ে এবার প্রস্তুতি, অনুশীলন ম্যাচ কম হয়েছিল।’
ছোটন এখনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দলে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। বাটলারের এমন মন্তব্যের পাল্টা মন্তব্য করেছিলেন সাবিনা। কাঠমান্ডু সাফে হঠাৎ তিনি এত আলোচনায় আসার কারণ খুজে পান না, ‘আর্মি দল অনুশীলন এবং পরিবার নিয়েই আমি ব্যস্ত। নারী খেলোয়াড়দের খেলা, অনুশীলন নিয়ে কোনো কথা হয় না। আমি ভবনের দিকে যাইও না। সাবিনা খেলার আগে দোয়া চায় শুধু, একজন মানুষ ও কোচ হিসেবে দোয়া করি ভালো খেলার জন্য। এর বেশি কিছু নয়।’
২০২৩ সালের এপ্রিলে অনেকটা অভিমানে নারী দল থেকে সরে গিয়েছিলেন ছোটন। নারী ফুটবলাররা প্রচ্ছন্ন চাওয়া ছোটনই তাদের কোচ হোক আবার। বাটলার নারী দলের দায়িত্বে না থাকলে ছোটন পুনরায় দায়িত্ব পাওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ছোটনের মতামত, ‘দেশকে নিয়ে কাজ করা অবশ্যই গর্বের। সেই সময় কাজের পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো ছিল না এজন্য ছেড়েছিলাম। এখন আমি নিজের বর্তমান কাজ নিয়েই ব্যস্ত। আগে ফেডারেশন থেকে প্রস্তাব আসতে হবে। ফেডারেশন প্রস্তাব দিলে এরপর সিদ্ধান্ত নেব।’
এজেড/এইচজেএস