সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ 

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ 

ঠাকুরগাঁওয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগ বিষয়ক সংবাদ এবং ঝিনাইদহের মহেশপুরে জমি দখল করে খেলার মাঠ বানানোর সংবাদের উপর স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

ঠাকুরগাঁওয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগ বিষয়ক সংবাদ এবং ঝিনাইদহের মহেশপুরে জমি দখল করে খেলার মাঠ বানানোর সংবাদের উপর স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

পৃথক ঘটনায় পৃথক সুয়োমটো গ্রহণের পাশাপাশি অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ঠাকুরগাঁও ও ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারকে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে নির্দেশ দিয়েছে মানবাধিকার কমিশন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর ‘ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু পরিবারের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগ’ এবং ‘সংখ্যালঘুর জমি দখল করে খেলার মাঠ’ বিষয়ক সংবাদে প্রকাশিত হয়। দুই সংবাদেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ঘটনা দুটি আমলে নিয়ে দুটি স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।

ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ৪টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে দুর্বৃত্ত কর্তৃক অগ্নিসংযোগের অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপারকে এবং ঝিনাইদহের মহেশপুরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর জমি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী কর্তৃক খেলার মাঠ বানানোর অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে। আদেশের অনুলিপি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রেরণ করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনের সুয়োমটোতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ৪টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে দুর্বৃত্ত কর্তৃক অগ্নিসংযোগের অভিযোগটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এছাড়াও বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের আশঙ্কা বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা প্রয়োজন। ইতিপূর্বেও ২০২৩ সালে ঠাকুরগাঁওতে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। এ অবস্থায়, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বানাগাঁও সরদারভিটা গ্রামের ধর্মীয় সংখ্যালঘু ৪টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে দুর্বৃত্ত কর্তৃক অগ্নিসংযোগের অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

অন্যদিকে, ঝিনাইদহের ঘটনায় গৃহীত সুয়োমটোতে উল্লেখ করা হয়েছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর জমি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী কর্তৃক খেলার মাঠ বানানোর অভিযোগটি অত্যন্ত নিন্দনীয়, মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও আদালত অবমাননার শামিল। তাই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে সুপরিচিত এবং এদেশের মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতি মেনে চলে। এদেশে দীর্ঘদিনের চর্চিত সহনশীলতার সংস্কৃতি বিনষ্ট করে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।

এ ধরনের ঘটনা সংখ্যালঘুদের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করেছে এবং ঘটনাগুলো সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা প্রয়োজন বলে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন।

জেইউ/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *