শ্রীপুরে শেখ হাসিনার নামে আরও দুই মামলা, কাদেরসহ আসামি ১২০০

শ্রীপুরে শেখ হাসিনার নামে আরও দুই মামলা, কাদেরসহ আসামি ১২০০

গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জামিল হাসান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজসহ ৯৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১ হাজার ১০০ জনকে আসামি করে পৃথক দুইটি মামলা করা হয়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জামিল হাসান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজসহ ৯৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১ হাজার ১০০ জনকে আসামি করে পৃথক দুইটি মামলা করা হয়েছে।

বুধবার (২৯ আগস্ট) রাতে মামলাটি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শ্রীপুরে নিহত রহমত মিয়ার বাবা মুঞ্জু মিয়া ও নিহত জাকির হোসেন রানার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। এ নিয়ে গাজীপুরের বাসন, গাছা ও শ্রীপুর থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে মোট সাতটি মামলা করা হলো।

মামলার এজাহারে শেখ হাসিনা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাবেক শ্রীপুর পৌর মেয়র আনিছুর রহমান, হুমায়ুন কবির হিমু, সিরাজুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা জাহিদুল আলম রবিন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির মোড়ল, মোরসালিন মামুনসহ ৯৭ জন।

মামলার অভিযোগে বাদী জামাল উদ্দিন উল্লেখ করেন, গত ০৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বিজিবি সদস্যদের ঢাকাতে সমবেত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিগত সরকার। সরকারের নির্দেশনা পেয়ে একাধিক বাসে করে ময়মনসিংহের বিভিন্ন ক্যাম্পে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বিজিবি সদস্যদের বহনকারী বাসগুলো  শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর (পল্লী বিদ্যুৎ ও বাংলাদেশ এনার্জি সেন্টার) সামনে পৌঁছালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখোমুখি হয়। বিজিবি সদস্যদের দিয়ে ঢাকার ছাত্র-জনতার আন্দোলন হটানো হবে, তাদের আটকে রাখা হয়েছে বলে খবর প্রকাশ হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় বিজিবি সদস্যদের ঢাকায় পাঠাতে আওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে থাকা অস্ত্র, গুলি ছিনিয়ে নিয়ে এবং কিছু অতি উৎসাহী বিজিবি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতায় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।

সেখানে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছোড়া গুলিতে আন্দোলনে থাকা শ্রীপুরের কপাটিয়াপাড়া গ্রামের জাকির হোসেন রানার (৩৫) বুকের মাঝামাঝি গুলি লাগে। তাৎক্ষণিকভাবে জাকিরকে উদ্ধার করে কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের প্রশিকা মোড় এলাকার আল হেরা মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে অপর মামলার বাদী মুঞ্জু মিয়া অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট সকালে বিজিবি সদস্যদের বহনকারী বাসগুলো মুলাইদ গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় পৌঁছালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখোমুখি হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ঘটনার দিন সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে থাকা অস্ত্র-গুলি ছিনিয়ে ও উপস্থিত আসামিদের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ ওরফে বাঘ বাদল ও আসামি রাসেল শেখের হাতে থাকা বিদেশি অস্ত্রের গুলি আন্দোলনে থাকা রহমত মিয়ার ডান হাতের নিচে বুকের পাঁজরে বিদ্ধ হয়। রহমত মিয়াকে উদ্ধার করে কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের প্রশিকা মোড় এলাকার আল হেরা মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শিহাব খান/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *