গাজীপুরের শ্রীপুরে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবদল ও কৃষক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবদল ও কৃষক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা সংলগ্ন বেড়াইদেরচালা এলাকায় অবস্থিত এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেড কারখানার ঝুট (পরিত্যাক্ত কাপড়) বের করার জন্য মালিক পক্ষ বৈধ ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এসএম পলাশ চঞ্চলের প্রতিষ্ঠান চঞ্চল এন্টারপ্রাইজকে ওয়ার্ক অর্ডার দেন। বুধবার এসএম পলাশের নেতৃত্বে ঝুট বের করার দিন ধার্য ছিল। খবর পেয়ে জেলা কৃষক দলের সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদের পক্ষে ২০০-৩০০ লোকজন দেশীয় অস্ত্র দা, লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র সহকারে ঝুটবোঝাই গাড়ি আটক করার জন্য কারখানার সামনে অবস্থান নেন।
এ খবর জানতে পেরে যুবদল নেতা এসএম পলাশের নেতৃত্বে যুবদলের লোকজন কারখানার গেটে এসে জেলা কৃষক দলের নেতা আবুল কালাম আজাদের লোকদেরকে ধাওয়া দেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ঘণ্টাব্যাপী দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলাকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুই পক্ষের সশস্ত্র অবস্থানের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
এদিকে সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করাকালে যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আলী বাবুর পেটে পিস্তল ধরে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। হোসাইন আলী বাবু জানান, সকালে পোশাক কারখানার খবর সংগ্রহ করতে গেলে কৃষক দলের নেতাকর্মীরা তার গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে এবং পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেন। পরে তারা মোবাইল থেকে ধারণ করা সমস্ত ছবি ডিলিট করে দেন। আর স্থান ত্যাগ না করলে তাকে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়। বিষয়টি তিনি থানা পুলিশ ও বিএনপির নেতাদের জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেড কারখানায় ঝুট নিয়ে একটি ঝামেলা হচ্ছে বলে জানতে খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চঞ্চল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এসএম পলাশ বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) দেয়। সে অনুযায়ী বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ঝুট বের করার জন্য আমার দুটি পিকআপ কারখানায় প্রবেশ করে। পরে সকাল ১০টার দিকে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক এসএম আবুল কালাম আজাদের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে তারা কারখানার সামনে আমার অফিসে হামলা করে ভাঙচুর করে। এ সময় তারা ৮-১০টি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে।
ঘটনার বিষয়ে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি সকাল থেকে ঢাকায় অবস্থান করছি। শুনতে পারলাম শ্রীপুরের মাওনায় কারখানা থেকে ঝুট বের করা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। আর সেখানে আমার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার কোনো লোক ওই প্রতিষ্ঠানে যায়নি। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
শিহাব খান/আরএআর