‌‘শিল্প প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকির তুলনায় সরকারের দেওয়া সুবিধা অপ্রতুল’

‌‘শিল্প প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকির তুলনায় সরকারের দেওয়া সুবিধা অপ্রতুল’

বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেছেন, যে পরিমাণ বিনিয়োগ ও ঝুঁকি নিয়ে রপ্তানিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা করে তার তুলনায় সরকার থেকে পাওয়া সুযোগ-সুবিধা খুবই অপ্রতুল। তাছাড়া সরকারের সুযোগ-সুবিধাগুলো পেতে বছরের পর বছর সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর হয়রানির শিকার হতে হয়। এতে অর্থ, শ্রম ও সময় তিনই ব্যয় হয়।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেছেন, যে পরিমাণ বিনিয়োগ ও ঝুঁকি নিয়ে রপ্তানিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা করে তার তুলনায় সরকার থেকে পাওয়া সুযোগ-সুবিধা খুবই অপ্রতুল। তাছাড়া সরকারের সুযোগ-সুবিধাগুলো পেতে বছরের পর বছর সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর হয়রানির শিকার হতে হয়। এতে অর্থ, শ্রম ও সময় তিনই ব্যয় হয়।

সোমবার (১২ আগস্ট) দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণের জন্য রাজধানীর একটি হোটেলে দুই শতাধিক শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভার শুরুতে শাহরিয়ার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের আরোগ্য কামনা করে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং হয়রানিমুক্তভাবে রপ্তানি কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সেবাগুলো পাওয়ার এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য সমস্যাগুলো মোকাবিলার জন্য করণীয় নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে মতামত ব্যক্ত করেন।

সভায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, আগে শিল্পে বিনিয়োগে অর্থের উৎস নিয়ে অনুসন্ধান করা হতো না। ফলে বিনিয়োগ বাড়তো। কিন্তু এখন প্রণোদনা ধীরে ধীরে কমেছে। প্রতি দশ জনের মধ্যে একজনের কর্মসংস্থান রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানে হয়।

পরে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ-হিল-রাকিব বলেন, বিজিএমইএ’র সদস্য ও কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে অঞ্চল ভিত্তিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ সময় তিনি ওয়্যারহাউস হতে মালামাল নিরাপদে স্থানান্তর করার, রুগ্ন ও ক্ষতিগ্রস্থ শিল্প প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক সংযোগ ছয় মাস পর্যন্ত না কেটে প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবসায় ফিরে আসার সুযোগ  দেওয়ার দাবিও জানান।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও থাই চেম্বারের সভাপতি শামস্ মাহমুদ দাবি করেন, পরিসংখ্যানের গরমিল ছিল বিধায় এলসিডি উত্তোরণ ১০ বছর পেছাতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হয়রানি নিরসন করতে বিচার বিভাগের মতো বিচার প্রদান নিশ্চিতকরণের প্রস্তাব করেন। এছাড়া ট্রেড পলিসির ফলে স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, সব সংগঠনের সমস্যাগুলো একত্রিত করে সরকারের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ করতে হবে।

বিগত ১৫ বছর ব্যবসায়ীরা মনের কথা বলতে পারেনি উল্লেখ করে বাংলাদেশ সুইং থ্রেড ম্যানুফ্রাচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কাসেম হায়দার বলেন, বিগত ১৫ বছর ব্যবসায়ীরা মনের কথা বলতে পারেনি। কথা বলার স্বাধীন ফোরাম ছিল না, এফবিসিসিআই দলীয়করণ হয়েছিল। ব্যবসায়ীক সভায় ব্যবসার পরিবর্তে রাজনৈতিক বক্তব্য হতো।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি এখন কথা বলার মতো ব্যবসায়ীক ফোরাম হবে,দম বিজিএমইএ দলীয় প্লাটফর্মের পরিবর্তে ব্যবসায়ীক প্লাটফর্মে পরিণত হবে। ১৬ শতাংশ ব্যাংক সুদ হার সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম হ্রাস করা হবে, শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হবে না। কারণ বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের একটি ব্র্যান্ড। তিনি বিদেশী বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হবেন।

সভায় বিজিএপিএমইএ এর প্রাক্তন সভাপতি রাফেজ আলম চৌধুরী শুরুতে সবাইকে স্বাগত জানান। মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ), বিজিএমইএ, থাই চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ সুইং থ্রেড ম্যানুফ্রাচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ এ্যাপারেল ইয়থ লিডারস অ্যালায়েন্স (বায়লা), ফ্রেইট ফরোয়াডার্স অ্যাসোসিয়েশন, এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি), বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব প্রিকারসর সলভেন্টম্যানুফ্যাকচারার্স (বিএপিএসএম), বিপিজিএমইএ, বিটিটিএলএমইএ, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি (নাসিব) সহ রপ্তানিমুখী ও সংশ্লিষ্ট ২১টিরও বেশি রপ্তানিমুখী বাণিজ্যিক সংগঠন ও চেম্বারের নেতারা অংশ নেন।

আরএইচটি/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *