শিক্ষকের বেত্রাঘাতে চোখের আলো হারিয়েছে শিশু মাহিদুলের

শিক্ষকের বেত্রাঘাতে চোখের আলো হারিয়েছে শিশু মাহিদুলের

ফেনীর দাগনভূঞায় তাপস মজুমদার নামে এক শিক্ষকের বেত্রাঘাতে চোখের আলো হারিয়েছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু মাহিদুল হাসানের। ঘটনার চার মাস পার হলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। এ অবস্থায় একমাত্র ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার। সন্তানের নিদারুণ কষ্টে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন মা-বাবা।

ফেনীর দাগনভূঞায় তাপস মজুমদার নামে এক শিক্ষকের বেত্রাঘাতে চোখের আলো হারিয়েছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু মাহিদুল হাসানের। ঘটনার চার মাস পার হলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। এ অবস্থায় একমাত্র ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার। সন্তানের নিদারুণ কষ্টে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন মা-বাবা।

মাহিদুল দাগনভূঞা উপজেলার জগতপুর এলাকার ডাক্তার বাড়ির প্রবাসী রেয়াজুল হকের ছেলে। সে ওয়াজেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছিল। অভিযুক্ত তাপস মজুমদার ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মাহিদুলের বাবা রেয়াজুল হক।

লিখিত বক্তব্যে মাহিদুলের মা হাসিনা আকতার বলেন, পড়া না পারার কারণে গত ১৪ মে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উপজেলার রামানন্দপুর গ্রামের কামিনী মজুমদারের ছেলে তাপস মজুমদার আমার ছেলেকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বেত্রাঘাত করলে ডান চোখের মণিতে আঘাত লাগে। সেদিন শিক্ষক ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপাচার করে চোখ থেকে বাঁশের কঞ্চি বের করা হয়। কিছুদিন পর মাহিদুলকে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে দেড় মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়েছি। এক পর্যায়ে চিকিৎসকদের অপারগতায় অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসি।

তিনি বলেন, ঘটনাটি প্রথমে শিক্ষক তাপস মজুমদার স্বীকার করে তার ভুল হয়েছে বলেছিলেন। পরবর্তীতে আমরা উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিচার চেয়ে অভিযোগ করলে তার বড় ভাই রাজেস মজুমদার আমাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। বর্তমানে ছেলের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সঙ্গে তাদের হুমকিতে আতঙ্কে দিন পার করছি। আমি ওই শিক্ষকের যথোপযুক্ত বিচার চাই।  

মাহিদুলের বাবা রেয়াজুল হক বলেন, আমি প্রবাসে অনেক কষ্টে দিনযাপন করে সন্তানকে শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু এমন এক শিক্ষকের কারণে আজ সব স্বপ্ন শেষ হতে বসেছে। ঘটনার চার মাস পার হয়ে গেলেও কোনো এক অজানা কারণে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি। শেষ পর্যন্ত ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারব কিনা তা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।  

এ প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত ওয়াজেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপস মজুমদারকে মুঠোফোনে কল করার চেষ্টা করলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সাংবাদিক পরিচয়ে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবেদিতা চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, তদন্তে এ ঘটনার সত্যতা মেলেছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। 

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের একটি প্রক্রিয়া চলছে।

তারেক চৌধুরী/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *