যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন দগ্ধ গৃহবধূ

যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন দগ্ধ গৃহবধূ

আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়ার গৃহবধূ ফজিলাতুন নেছা (২৪)। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

বহুদিন ধরেই যৌতুক দাবি করে আসা ফজিলাতুন নেছার স্বামী গোলাম রাব্বানীই গত মঙ্গলবার সকালে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। 

ফজিলাতুন নেছার বাবা ফজলুর হোসেন। গোলাম রাব্বানীসহ তার পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন তিনি। এ মামলায় পুলিশ ইতিমধ্যেই গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

ফজিলাতুন নেছার পরিবার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিকভাবে চার বছর আগে সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর সাথে বিয়ে হয় ফজিলাতুন নেছার। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন গোলাম রাব্বানী। বিষয়টি তার স্ত্রী জানতে পেরে নিষেধ করলে সাড়ে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেলে পরকীয়া চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন তিনি। এরপর থেকেই স্ত্রী ফজিলাতুন নেছাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন গোলাম রাব্বানী ও তার পরিবারের সদস্যরা। 

এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার সকাল আবারও তাকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ওই মুহূর্তে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন স্বামী গোলাম রাব্বানী। একপর্যায়ে স্ত্রী অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় গোলাম রাব্বানী। দগ্ধ ফজিলাতুন নেছার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রথমে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ  (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে ঢামেকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ফজিলাতুন নেছা।  

ফজিলাতুন নেছার বাবা ফজলুর হোসেন বলেন, যৌতুকের জন্য প্রায়ই আমার মেয়েকে চাপ দিতো তার স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকেরা। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার তাদের সঙ্গে বসে সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। এরপরেও মেয়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ করেনি। শেষ পযর্ন্ত আমার মেয়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিলো ওরা। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। যাতে আর কোনো মেয়েকে যৌতুকের জন্য এমন নির্যাতনের শিকার হতে না হয়।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, এ ঘটনায়  কয়েকজনের নামে একটি মামলা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত গোলাম রাব্বানীকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

আরমান হোসেন রুমন/এনএফ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *